চলল ভাঙচুর। শনিবার জেলা সদর হাসপাতালে। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
শিশুমৃত্যুর ভুয়ো খবরের জেরে ভাঙচুর হল জেলা সদর হাসপাতালে। শনিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় পুলিশ রাত পর্যন্ত এক মহিলা-সহ তিন জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শান্তিপুরের বাগদিয়ার বাসিন্দা চম্পা খাতুন বিবির বাড়িতেই প্রসব বেদনা উঠেছিল। সদর হাসপাতালে আনার পথে রাস্তাতেই তিনি একটি অপরিণত সন্তান প্রসব করেন। শিশুর ওজন ছিল এক কেজি ২০০ গ্রাম। তার শ্বাসকষ্ট এবং আরও কিছু সমস্যা ছিল। শিশুটিকে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটে (এসএনসিইউ) রাখা হয়। চম্পা ভর্তি আছেন প্রসূতি বিভাগে।
শিশুটির পরিবারের দাবি, শনিবার সকালে কোনও এক হাসপাতাল কর্মী চম্পার শাশুড়ি সামসুরনেসা বিবিকে জানান যে শিশুটি মারা গিয়েছে। তিনি ওয়ার্ড থেকে নীচে নেমে এসে বাড়ির লোকজনকে সেই খবর দেন। এর পর পরিবারের লোকেরা ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে গিয়ে শিশুটির মৃতদেহ চান।
দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড মাস্টার সুভাষ রায়ের দাবি, “আমি প্রথম থেকেই ওঁদের বলে আসছি যে আমাদের কাছে এ রকম কোনও শিশুর মৃত্যুর খবর নেই। কিন্তু ওঁরা তা শুনতে চাইছিলেন না।” শিশুটির বাবা জাহাঙ্গির শেখের পাল্টা দাবি, “হাসপাতালেরই এক জন আমার মাকে বলেছিল যে আমাদের বাচ্চা মারা গিয়েছে। মৃত্যুর খবর ভুল দেওয়া হয় না, এটা ভেবেই আমরা বারবার ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে গিয়েছি। কিন্ত কোনও সদুত্তর পাইনি। সন্ধ্যায় আবার এক জন ডোম এসএনসিইউ থেকে খবর নিয়ে এসে বলে, বাচ্চা মারা যায়নি।”
এর পরেই ভাঙচুর শুরু হয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কেন শিশুমৃত্যুর ভুয়ো খবর দেওয়া হল এই প্রশ্ন তুলে পরিবারের সঙ্গে থাকা কয়েক জন যুবক জরুরি বিভাগ এবং হাসপাতাল গেটের সামনে কাচ, দেওয়াল ঘড়ি ইত্যাদি ভেঙে দেয়। কর্মীদেরও তারা মারধর করে। খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা গেলে তাঁদের উপরেও তারা চড়াও হয়, এক চিত্রগ্রাহকের ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া বলে অভিযোগ।
প্রশ্ন হল, শিশুটির পরিবারের দাবি যদি সত্যি হয় তা হলে কেন এমন ‘ভুয়ো খবর’ তার পরিবারের কাছে পৌঁছল? হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, হাসপাতালে এ দিন অন্য এক সদ্যোজাত মারা গিয়েছে। ভুল করে চম্পার পরিবারকে সেই খবরই দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।
রাতে জেলা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দেবব্রত দত্ত বলেন, “সকলের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করছি, ঠিক কী ঘটেছে। শিশুটি বেঁচে আছে, আগের তুলনায় ভাল আছে।”