শান্তিপুর স্টেশন। —নিজস্ব চিত্র।
‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পের তালিকায় অদ্বৈতভূমি শান্তিপুরের নাম আগেই যুক্ত হয়েছিল। এ বার আরও একধাপ এগিয়ে শান্তিপুর স্টেশনে তাঁত কাপড়ের বিপণি খুলবে পূর্ব রেল। সম্প্রতি রেলের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে খোলনলচে বদলে ফেলা হবে শান্তিপুর রেল স্টেশনের। গত পয়লা ফেব্রুয়ারি শান্তিপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটে ‘বিগ বাজার’ তৈরির ঘোষণার পর রেলের এমন বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে শান্তিপুর স্টেশনের আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রেল। অমৃত ভারত প্রকল্পের কাজ যেমন হবে, তেমনই সাজিয়ে তোলা হবে স্টেশন চত্বর। গত তিন ফেব্রুয়ারি জানানো হয়েছে, 'ওয়ান স্টেশন, ওয়ান প্রোডাক্ট' বিপণি ব্যবহার করে স্থানীয় কারিগর এবং শিল্পীরা তাঁদের তৈরি কাপড় বিক্রির সুযোগ পাবেন। এতে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। রেলের আরও যুক্তি, উন্নত পরিকাঠামোয় যেমন যাত্রীরা আধুনিক পরিষেবা পাবেন, তেমনই তাঁত শিল্পকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে শান্তিপুর স্টেশন অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠবে। পাশাপাশি এই স্টেশন পরিচিতি পাবে ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবেও। স্টেশনের কোথায় কোথায় তাঁত কাপড়ের বিপণি থাকবে, সে ব্যাপারেও ইতিমধ্যেই স্টেশন পরিদর্শনের কাজ শুরু করেছেন পূর্ব রেলের কর্তারা।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পয়লা ফেব্রুয়ারি শান্তিপুরে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলাশাসককে নির্দেশ দেন কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটে জমি চিহ্নিতকরণের জন্য। যেখানে গড়ে তোলা হবে ‘বিগ বাজার’। স্থান পাবে শান্তিপুরের রকমারি তাঁত কাপড়। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের সারা বাংলা তাঁত শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সনৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্রের যদি তাঁত শিল্পীদের নিয়ে সত্যিই কিছু ভাবনা-চিন্তা থাকত, তা হলে লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার অনুকরণ করতে হত না। শান্তিপুর
থেকে নবদ্বীপ পর্যন্ত ট্রেন এখনও পর্যন্ত চালু করতে পারল না রেল। তারা আবার স্টেশনকে কেন্দ্র করে তাঁত শিল্পের বিকাশ ঘটাবে!’’ রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বিজেপির জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘গত দুই বছর ধরেই অমৃত ভারত প্রকল্পে দেশের বিভিন্ন রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্থানীয় শিল্পকে প্রাধান্য দিতে স্টেশনগুলিতে বিপণি করেছে রেল। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে নকল করার কিছু নেই।’’