মৃত শঙ্কু হালদার। —নিজস্ব চিত্র।
দিন ছয়েক আগে হঠাৎই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন যুবক। বন্ধ ছিল মোবাইল। পরিবারের লোকজন বারবার চেষ্টা করেও কোনও ভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে দ্বারস্থ হন পুলিশের। বহরমপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হয়। তার তিন দিন পর দেহ উদ্ধার হয় ওই যুবকের। পরিবারের অভিযোগ, প্রেমিকার সঙ্গে অশান্তির জেরে বাড়ি ছেড়েছিলেন ওই যুবক। কিন্তু তিন দিন আগে যুবকের দেহ উদ্ধার হয়ে গেলেও পুলিশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে ময়নাতদন্ত শেষ করে ফেলেছে। সোমবার এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। তাতে যোগ দেন বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। পুলিশের হস্তক্ষেপে কিছু ক্ষণের মধ্যে অবশ্য অবরোধ উঠে যায়। গোটা ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে জেলা পুলিশের শীর্ষকর্তারা।
অন্য দিকে, পুলিশের দাবি, দেহ শনাক্ত না হওয়ায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে আইনি প্রক্রিয়ায় ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। প্রথমে দেহ শনাক্ত করা যায়নি বলে পরিবারে খবর পাঠাতে সময় লেগেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর থানার ভাকুড়ি-ঠাকুরপাড়া এলাকার এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে সোমবার মৃতের পরিবারের সদস্যেরা বহরমপুরের বিধায়ককে নিয়ে থানায় উপস্থিত হন। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম শঙ্কু হালদার (২৫)। পরিবারের দাবি, গত ১৫ মে শঙ্কুর নিখোঁজ হওয়ার খবর বহরমপুর থানায় জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। শেষে কলাবেড়িয়ার চৌধুরীপাড়া চর এলাকায় যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ তাঁর পরিবারের সদস্যদের খবর না দিয়ে দেহটিকে ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ হিসাবে নথিভুক্ত করে ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ফেলে বলে অভিযোগ। যদিও পরবর্তী কালে সংবাদমাধ্যমে শঙ্কুর ছবি দেখে পরিবারের সদস্যরা দেহ শনাক্ত করে থানায় যান।
পরিবারের দাবি, গত ১৪ মে রাতে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে বাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন শঙ্কু। কিন্তু মাঝরাতে সবার অজান্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান যুবক। পরদিন অনেক খোঁজাখুঁজির পর বহরমপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি হয়। শঙ্কুর পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাদের খবর দেয়নি।
এই ঘটনা নিয়ে বহরমপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে ওই যুবকের সঙ্গে কান্দি-মহলন্দী এলাকার এক মহিলার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে ওই মহিলা শঙ্কুর সঙ্গে কথাবার্তা বন্ধ করে দেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সেই কারণে ওই যুবক মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন।’’
পাশাপাশি পুলিশের তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে শঙ্কুর নিখোঁজের বিষয়টি থানায় জানানো হলেও তাঁর দেহ উদ্ধারের পর ‘সময় মতো’ পরিবারকে খবর পাঠানো যায়নি। কারণ চিহ্নিত করতে সময় লেগেছে।