লালবাগ। —নিজস্ব চিত্র।
রাতের অন্ধকারে বিষ প্রয়োগ করে কুইন্টাল কুইন্টাল মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহরে। একে অন্যের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস।
বহরমপুর পুরসভার মালিকানাধীন জলাভূমি লালদিঘিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই মাছ ব্যবসায়ীরা লিজ় নিয়ে মাছ চাষ করেন। সোমবার থেকে হঠাৎই ব্যবসায়ীদের নজরে আসে, দিঘিতে প্রচুর পরিমাণে মাছ মরে ভেসে উঠেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের অনুমান, গত দু’দিন মিলিয়ে কমপক্ষে ৪০ কুইন্টাল মাছের মৃত্যু হয়েছে। বিষাক্ত হয়ে পড়েছে জল। মরা মাছ জলে পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে গোটা এলাকাতেই।
লিজ় নেওয়া মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, ‘‘আমরা পুরসভার কাছ থেকে লিজ়ে নিয়ে এই দিঘিতে মাছ চাষ করি। কেউ বা কারা দিঘির এক কোণে রাসায়নিক ফেলে গিয়েছে। সোমবার থেকে দিঘিতে অস্বাভাবিক হারে মাছের মৃত্যু হতে থাকে। সোমবার আমরা ১০ কুইন্টাল মরা মাছ তুলেছি। মঙ্গলবার প্রায় ৩০ কুইন্টাল মরা মাছ দিঘির জল থেকে থেকে তোলা হয়েছে। আমাদের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’’
এ নিয়ে বহরমপুর পুরসভা এবং জেলা প্রশাসনকে দায়ী করে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘এই দিঘি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ওই এলাকার আশপাশে প্রচুর মানুষের বাস। মাছ মারা গিয়ে জলে পচে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কিন্তু এখানকার প্রশাসন সাধারণ মানুষকে কোনও জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না!’’ অন্য দিকে, এই গোটা ঘটনার দায় কংগ্রেসের উপর চাপিয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূলকে দুর্নাম করার জন্য কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লালদিঘির জলে বিষ মিশিয়েছে। ওই দিঘি বহরমপুর পুরসভার মালিকানাধীন। কেউ কি কখনও নিজের সম্পত্তির ক্ষতি করে?’’ পরস্পরের এই আকচাআকচির মধ্যে মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের। কাদের কারণে তাঁদের এত বড় ক্ষতি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।