ফের গঙ্গার জল নেমে যাওয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট। —নিজস্ব চিত্র।
এক মাসের মধ্যে ফের জল সঙ্কটে ধুলিয়ান পুরবাসী। ডিসেম্বর মাসের ১৪, ১৫, ১৬ তিন দিন পরিস্রুত পানীয় জল পাননি তাঁরা। ফের নির্জলা ধুলিয়ান পুরবাসী মঙ্গলবার বিকেল থেকে। পুরসভা জানিয়েছে, চেষ্টা হচ্ছে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার।
ধুলিয়ান পুরসভা সূত্রে জানা যায় জলের অভাবে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুরসভা চেষ্টা করছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জল সরবরাহ করার। জানা যায়
বর্ষা শেষ হতেই গঙ্গার জলস্তর দ্রুত নীচে নেমে যাওয়ার কারণে গঙ্গায় চরা পড়তে শুরু হয়। গঙ্গার জল পরিস্রুত করে ধুলিয়ান পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডে সরবরাহ করা হয়। পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য গঙ্গায় সার্ভে করে পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের লালপুরে জলস্তর সঠিক থাকায়, সেখান থেকে জল উত্তোলনের জন্য পাম্প বসানো হয়। দু’বছর ধরে বর্ষার পর থেকেই ধুলিয়ানে জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তার কারণে একটি লোহার নৌকোয় পাম্প বসিয়ে জল সরবরাহ করা শুরু করে পুরসভা। এবারে নৌকোর পাম্পেও জল তোলা সম্ভব না হওয়ার কারণে মঙ্গলবার ও বুধবার জল সরবরাহ বন্ধ আছে।
এর আগে নালা কেটে জল সরবরাহ করা হয়েছিল, সেই নালা বালি পড়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে জল আসছে না। ফের নালা কেটে পাম্পের নৌকো সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। নালা কেটে জল নিয়ে আসতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগতে পারে বলে পুরসভা থেকে জানা যায়। কিন্তু যে ভাবে জলস্তর নীচে নামছে ও গঙ্গায় চরা পড়ছে এতে কত দিন জল সরবরাহ ঠিক মতো করা যাবে এই আশঙ্কা থাকছে।
ধুলিয়ান পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা দুর্গা সরকার বলেন, ‘‘পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য সঠিক ভাবে সমীক্ষা না করেই নিজেদের মতো করে ভোটের জন্য তাড়াহুড়ো করে জল প্রকল্প রূপায়িত করা হয়। সেই সময় যদি ফিডার ক্যানেল থেকে জল তুলে পরিস্রুত করার ব্যবস্থা করত তা হলে আজকে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হত না। তৎকালীন কিছু বাম নেতা ও পুরপ্রধানের ভুলের মাসুলে ভুগতে হচ্ছে ধুলিয়ানের জনগণকে। শুনেছি আর একটি ফিডার ক্যানেল থেকে জল তোলার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সেই কাজ কখন শুরু হবে তারও ঠিক সময় জানানো হয়নি।’’
ধুলিয়ানের উপ পুরপ্রধান সুমিত সাহা বলেন, ‘‘গঙ্গার জল ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের মর্জি মাফিক চলে। গত বছর থেকে গঙ্গার জল ধুলিয়ান শহরের পাশ থেকে দুরে চলে গিয়েছে কারণ এদিকের ব্যারাজের গেট বন্ধ ছিল। তার কারণে আমরা জল পাচ্ছি না। ফরাক্কার ব্যারাজ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। আমরা শহরে জলের পরিষেবা ঠিক মতো রাখতে নালা কেটে জল তুলে পরিস্রুত করে সরবরাহ করছি।’’
সুমিত বলেন, ‘‘বিকল্প আর একটির জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা করছি সেখানেও বাধা কেন্দ্র সরকারের। জমি জট কাটলে সেই কাজ দ্রুত শুরু হয়ে যাবে।’’