প্রতীকী ছবি।
আশা জাগিয়েও জেলার দক্ষিণে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। কয়েকটি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নির্দলদের সমর্থনে বোর্ড গড়ার আশা থাকলেও তা শেষ মুহূর্তে ফলবতী হয়নি। ফলে এখন নদিয়া দক্ষিণের নেতৃত্বকেই কাঠগড়ায় তুলছেন দলের কেউ-কেউ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের দায়িত্ব্বপ্রাপ্ত নেতাদের রিপোর্টে জেলা থেকে মণ্ডল কমিটির ব্যর্থতাই উঠে এসেছে।
রিপোর্ট বলছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের অধিকাংশ মণ্ডল কমিটির সভাপতিরা ব্যর্থ হয়েছেন। দলের নদিয়া দক্ষিণ জেলা কমিটির মধ্যেও সমন্বয়ের অভাব ছিল। অধিকাংশ মণ্ডল সভাপতিরা নির্বাচনের সময়ে বুথস্তরে সক্রিয় ভূমিকা নেননি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপির একটি তরফে। এমনকি নির্বাচন শুরু থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত নানা পর্বে দলের রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়েও সে ভাবে জেলা বা বুথস্তরে কোনো আলোচনা হয়নি। দলের মণ্ডল এবং বুথস্তরের অনেক নেতারই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে।
সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে যাঁরা সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন, তাঁদের নেতৃত্বের প্রথম সারিতে আনার দাবিও উঠেছে। পাশাপাশি জেলা এবং নিচুতলার নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয় তৈরির উপরে জোর দেওয়ার দাবিও উঠেছে। দিন কয়েক আগেও শান্তিপুরে নদিয়া দক্ষিণের একটি বৈঠকে দলের জেলা নেতাদের কাজকর্মে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বেশ কিছু নেতা-কর্মী। বেশ কিছু পঞ্চায়েতে সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেও কেন তার সুযোগ নেওয়া গেল না, সেই প্রশ্নও ওঠে।
নদিয়া জেলা বিজেপিতে চিরকাল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিলই। বর্তমানে তা কিছুটা চাপা পড়ে আছে। লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে এগোতে চাওয়া পদ্ম শিবির রানাঘাট লোকসভাতেও জয়ের জন্য ঝাঁপাতে চায়। সাংগঠনিক সুবিধার জন্য জেলা কমিটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু এই আপাত সাংগঠনিক দুর্বলতা চিন্তায় রাখছে তাদের।
মণ্ডল এবং বুথস্তরে সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা কার্যত মানছেন দলের জেলা নেতারাও। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জগন্নাথ সরকার বলেন, “কিছু জায়গায় দুর্বলতা তো আছেই। মণ্ডল সভাপতিরা অনেকেই নতুন। তাঁরা এখনও সে ভাবে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারেননি। সবাই চেষ্টা করছেন, আগামী দিনে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠার।” তাঁর দাবি, অনেক জায়গায় শাসক দলের সন্ত্রাসে পিছু হটতে হয়েছে। কারণ সেই সন্ত্রাস প্রতিরোধ করার মতো সাংগঠনিক শক্তি তাঁদের ছিল না। যদিও তৃণমূল নেতারা এই দাবি ‘অক্ষমের অজুহাত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।