BJP

বিদ্রোহ জেলা বিজেপির অন্দরে

রাজ্য সভাপতির পাশাপাশি মণ্ডল সভাপতিরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও তাঁদের সই করা চিঠি পাঠিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০১:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

সরাসরি সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন মণ্ডল সভাপতিরা। আর বিজেপির অন্দরে সেই বিদ্রোহের ঢেউ রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে আছড়ে পড়ল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত। রাজ্য সভাপতির পাশাপাশি মণ্ডল সভাপতিরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও তাঁদের সই করা চিঠি পাঠিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।

Advertisement

আগামী বিধানসভা ভোটে নদিয়াকে অন্যতম সম্ভবনাময় জেলা হিসাবে দেখছে বিজেপি। মতুয়া ভোটের জোরে জেলার দক্ষিণ অংশে অনেকটাই এগিয়ে তারা। কিন্তু উত্তরের পরিস্থিতি ততটা ভাল নয়। তবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চাপড়া, কালীগঞ্জ ও পলাশিপাড়া ছাড়া জেলার প্রায় সর্বত্রই বিজেপি নেতারা তাঁদের জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। লোকসভা ভোটে এই তিনটি বিধানসভা এলাকার জন্যই যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে সে কথা তৃণমূল নেতাদের অধিকাংশই স্বীকার করেন নেন। এই পরিস্থিতিতে জেলা সভাপতির ও মণ্ডল সভাপতিদের মধ্যে লড়াই ভালভাবে নিতে পারছেন না দলের কর্মীরা। তাঁরা চাইছেন, এর অবসান হোক। কিন্তু সহজে তা মেটার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।

বর্তমান সভাপতি আশুতোষ পাল-কে সরিয়ে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁরই জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহাদেব সরকারকে। কিন্তু ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর মহাদেব সরকারকে সরিয়ে ফের আশুতোষবাবুকে সভাপতি করা হয়। এর মধ্যে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলায় মণ্ডল সভাপতি নির্বাচিত হয়ে গিয়েছিলেন। মহাদেব সরকার তখন জেলা সভাপতি।৩৫টি মণ্ডলের মধ্যে প্রায় ৩০টিতেই তিনি তাঁর অনুগামীদের বসিয়ে দেন। মণ্ডলের অধীনে শক্তিক্ষেত্রগুলিও মহাদেব সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে বলে তার অনুগামীদের দাবি। কিন্তু তার পরেই রাজ্য নেতৃত্ব মহাদেববাবুকে সরিয়ে দেন। অথচ, মণ্ডল ও শক্তিক্ষেত্রে তাঁর নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে থেকে যায়। ফলে আশুতোষবাবু জেলা সভাপতি হলেও তৃণমূল স্তরে নিয়ন্ত্রণ তাঁর হাতে থাকে না।

Advertisement

আশুতোষবাবু নিজের মতো করে জেলা কমিটি তৈরি করেছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, জেলা কমিটির তাঁর পক্ষে আর সিংহভাগ মণ্ডল কমিটি ও শক্তিক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে রয়ে গিয়েছে। তাঁর অনুগামীদের অভিযোগ, মণ্ডল স্তরে তাঁকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে দলীয় কর্মসূচি সে ভাবে পালন করা হচ্ছে না। ভোটার লিস্ট স্ক্রুটিনি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী গৃহ সম্পর্ক অভিযান বা সদস্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও সব মণ্ডলকে সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে না।

আবার বিক্ষুব্ধ মণ্ডল সভাপতিদের অভিযোগ, জেলা সভাপতি ও জেলা কমিটি জেলার সাংগঠনিক কাঠামোকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রতিটি স্তরে নিজেদের লোক দিয়ে সমান্তরাল ভাবে কাজ চালাচ্ছে। পাশাপাশি বুথ থেকে শুরু করে মণ্ডল স্তরে সভাপতি পরিবর্তনের হুমকি দিচ্ছে।পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থীদের হারানোর জন্য তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাত করা হয়েছিল বলে বিক্ষুব্ধ মণ্ডল সভাপতিদের অভিযোগ। সম্প্রতি মণ্ডল সভাপতিদের ২৮ জন এই মর্মে রাজ্য ও কেন্দ্র নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

এই বিষয়ে মহাদেববাবু বলেন, “আমাকে সংগঠনের কাজে রাজ্য জুড়ে দৌড়াতে হচ্ছে। তাই জেলায় ঠিক কী হচ্ছে বলতে পারব না।” আর আশুতোষবাবুর কথায়, “এমন কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। আমাদের দলে এমন হয়ও না। সাংগঠনিক ভাবে এমন অভিযোগ করাও যায় না। এ সবই বিরোধীদের অপপ্রচার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement