রঘুনাথগঞ্জ রবীন্দ্রভবন

বৃষ্টি পড়লে মঞ্চ ভাসে জলে

ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ভাঙা চেয়ার। মরচে ধরে খসে খসকে পড়ছে টিনের ছাদের বিরাট অংশ। খুলে পড়েছে ড্যাস বোর্ডের ফলস সিলিং।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:২৩
Share:

খুলে পড়ছে ফলস সিলিং। নিজস্ব চিত্র।

ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ভাঙা চেয়ার। মরচে ধরে খসে খসকে পড়ছে টিনের ছাদের বিরাট অংশ। খুলে পড়েছে ড্যাস বোর্ডের ফলস সিলিং। বৃষ্টিতে ছাদ চুঁইয়ে পড়ছে জল। ঘুণ ধরেছে কাঠের পাটাতনে।

Advertisement

এ কোনও ‘হরর’ ফিল্মের ভাঙাচোরা বাড়ির বর্ণনা নয়। এমনই বেহাল অবস্থা রঘুনাথগঞ্জ রবীন্দ্রভবনের।

গত দু’মাসে শহরের একাধিক সংস্থা রঘুনাথগঞ্জ রবীন্দ্রভবনে নাট্যোৎসব করেছে। সকলেই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে এই বেহাল অবস্থার। অনেকেই অভিযোগ জানিয়েছেন জঙ্গিপুর পুরসভার কাছে। পুরসভাই সেটি দেখভাল করে।

Advertisement

গোটা জঙ্গিপুর মহকুমায় এই ধরনের সরকারি নাট্যমঞ্চ নেই। স্বভাবতই শহরের একাধিক নাট্য সংস্থা, যে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক সম্মেলন, বা সরকারি সভার একমাত্র ভরসা ওই রবীন্দ্রভবন।

শতবর্ষ প্রাচীন শহর হলেও রঘুনাথগঞ্জে গত ষাটের দশক পর্যন্ত কোনও স্থায়ী মঞ্চ ছিল না।

শহরের নাট্যপ্রেমীদের একটি সংস্থা নিজস্ব জমি বিক্রির টাকায় শুরু হয় রবীন্দ্রভবন তৈরির কাজ। পরে সেই কাজে এগিয়ে আসে একাধিক নাট্য সংস্থা ও নাট্যপ্রেমীরা। গড়ে ওঠে রবীন্দ্রভবন। বছর কুড়ি আগে রবীন্দ্রভবনের তৎকালীন কর্মকর্তারা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জঙ্গিপুর পুরসভাকে সেটি হস্তান্তর করেন।

সেই থেকেই পুরসভাই সেটি দেখভাল করে।

ক’দিন আগেই ওই ভবনে পাঁচ দিনের ‘মৈত্রী নাট্যোৎসব ২০১৬’-র আয়োজন করে নাট্যম শ্রদ্ধাঞ্জলি নামে একটি সংস্থা। বাংলাদেশ-সহ রাজ্যের একাধিক সংস্থা যোগ দেয় উৎসবে। সকলেই রঘুনাথগঞ্জের রবীন্দ্রভবনের বেহাল দশা দেখে হতবাক হয়ে যান।

আয়োজক সংস্থার এক কর্তা দিব্যেন্দু দাস জানান, কী ভাবে নাট্যোৎসব করেছেন তা তাঁরাই জানেন। নামেই রবীন্দ্রভবন। কিন্তু আলো, সাউন্ড, জেনারেটর সব ভাড়া করতে হয়েছে। কাঠের মঞ্চের ঘুণ ধরে এমনই দুরবস্থা যে মঞ্চে উঠলে সেটি দুলতে শুরু করে।

তিনি বলেন, “পুরপ্রধানকে দুরবস্থার কথা জানিয়েছি। কিন্তু সংস্কারের কোনও আশ্বাস মেলেনি।”

আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে রঘুনাথগঞ্জ নাট্য নিকেতনের চার দিনের সপ্তম বর্ষ নাট্যোৎসব। সংস্থার কর্ণধার নারায়ণ মণ্ডল বলেন, “উৎসবের জন্য ২৩০০ টাকায় সাউন্ড বক্স ও ২০০০ টাকায় আলোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে। অথচ যাবতীয় সরঞ্জাম থেকেও তা অকেজোয় হয়ে পড়ে রয়েছে রবীন্দ্রভবনে।’’

রবীন্দ্রভবনের বেহাল দশার কথা মানছেন জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম। তবে তাঁর সাফাই, “ভবন সারাতে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা দরকার। কিন্তু এত টাকা কোথায়?’’ তাঁর দাবি, ভবনটি সংস্কারের জন্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। মন্ত্রী বিষয়টি ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement