তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সত্যেন চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতাকে গুলি করতে বাইক নিয়ে যে তিন জন এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে এক জনের মাথায় ছিল হেলমেট। কিন্তু শিরস্ত্রাণ পরেও পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। অবশেষে আদালত চত্বর থেকে গ্রেফতার হলেন তৃণমূল নেতা সত্যেন চৌধুরী খুনে অন্যতম অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকালে আদালত চত্বর থেকে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। ধৃতের নাম রহিম মণ্ডল।
পুলিশ সূত্র খবর, গ্রেফতারি এড়াতে বাংলাদেশে গা ঢাকা দিতে চেয়েছিলেন রহিম। সীমান্ত পেরিয়ে সে দেশে তাঁকে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেন এক শাগরেদ। তাঁর সঙ্গে শলা-পরামর্শ করতে মঙ্গলবার আদালত চত্বরে আসেন রহিম। গোপন সূত্রের সেই খবর পেয়ে রহিমকে গ্রেফতারির টোপ ফেলে পুলিশ। রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা। মঙ্গলবারই ধৃতকে তোলা হয় আদালতে। বিচারক তাঁর দশ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।
গত ৭ জানুয়ারি বহরমপুর থানার চালতিয়ায় একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে খুন হন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সত্যেন। পাশের একটি দোকান থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশ দেখতে পায় একটি বাইকে তিন জন এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের মাথায় ছিল হেলমেট। গুলি চালানোর পর ধীরেসুস্থে আততায়ীরা সত্যেনের দু’টি মোবাইল ফোন নিয়ে পালায়। ওই সূত্র ধরে খোঁজ শুরু হয় খুনিদের। ঘটনাস্থল থেকে পালাবার একাধিক রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে খুনিরা নওদা হয়ে নদিয়ার সীমান্তে গা ঢাকা দিয়েছে। সে দিন রাত থেকেই শুরু হয়েছিল তল্লাশি।
সত্যেনের একটি ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। তার কল লিস্ট খতিয়ে দেখে নদিয়ার এক তৃণমূল নেতা সম্পর্কে তথ্য পান তদন্তকারীরা। তার পর নদিয়ার তেহট্ট-১ ব্লকের কানাইনগর অঞ্চলের যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি মুস্তাফা শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিন পান। এর মধ্যে মঙ্গলবার, খুনে অন্যতম অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার সূর্য প্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘খুনের পর থেকেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আততায়ীদের খোঁজ চলছিল। বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্রধান অভিযুক্তের খোঁজ মেলে। গতকাল (মঙ্গলবার) তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কারা এই ঘটনায় যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’