Child Marriage

Child Marriage: নাবালিকা বিয়ে বন্ধে মাঠে পুরোহিত, ইমাম

লাগাতার প্রচার ও নজরদারির কারণে জেলায় নাবালিকা বিয়ে অনেকটাই কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু করোনা যেন গোটা পরিস্থিতিই বদলে দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২২ ০৭:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে এবার ইমাম, পুরোহিতদের ময়দানে নামাতে চাইছে প্রশাসন। সেই উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সংখ্যালঘু ভবনের কনফারেন্স হলে একটি বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানে পুরোহিত, ইমামদের পাশাপাশি খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছিল। কর্মশালায় নাবালিকা বিবাহের কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি ‘পকসো’ আইন নিয়েও সচেতন করা হয়।

Advertisement

এদিনের কর্মশালায় নাবালিকা বিয়ে বন্ধের অভিযানে ইমাম, পুরোহিতদের শামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, সমাজের বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পাশাপাশি সমাজের সর্ব স্তরের মানুষ এই সকল ধর্মীয় প্রতিনিধিদের বার্তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। সেই কারণেই এবার তাঁদেরকে সামনের সারিতে নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে কর্তারা জানান।

লাগাতার প্রচার ও নজরদারির কারণে জেলায় নাবালিকা বিয়ে অনেকটাই কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু করোনা যেন গোটা পরিস্থিতিই বদলে দেয়। করোনা কালে নাবালিকা বিবাহের সংখ্যা প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পায়। এতে কার্যত উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা। বিশেষ করে, স্কুল খোলার পর পরিসংখ্যান থেকে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। স্কুলে অনুপস্থিত ছাত্রীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দেখা যায় যে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নাবালিকা পড়ুয়ার বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “এর পিছনে যেমন আর্থিক কারণ আছে, তেমনই আছে সামাজিক কারণও। অনেকেই চান কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে। আমরা তাই সামাজিক ভাবে মানুষকে সচেতন করতে ইমাম-পুরোহিতদের সহযোগিতা নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “শুধু তাই নয়, এঁরাই মূলত বিয়ে দিয়ে থাকেন। প্রচারের পাশাপাশি এঁরা যদি বিয়ে দেওয়ার আগে বয়সের প্রমাণপত্র ভাল করে দেখে নেন, তা হলেই অনেক নাবালিকা বিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে।”

সেই উদ্দেশ্যেই এ দিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিন্দু, মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। কালীগঞ্জের দেবগ্রাম নেতাজিনগর মসজিদের ইমাম আব্দুল আজিজ বলছেন, “আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষ আগের চেয়ে অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। তবে এখনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার দরকার। আজকের কর্মশালায় গিয়ে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছি। আমি নিজে নাবালিকা বিয়ে দিই না। তবে এবার থেকে আরও বেশি সচেতন হয়ে বিয়ে পড়াব।” পাশাপাশি, তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার করার কথাও জানিয়েছেন।

একই কথা বলছেন শান্তিপুরের গোবিন্দপুর এলাকার কালীমন্দির কমিটির সম্পাদক অনুপম সাহা। এই কালী মন্দিরে প্রচুর সংখ্যক হিন্দুর বিয়ে হয়ে থাকে। কখনও কখনও নাবালিকা বিয়ের অভিযোগও ওঠে। যদিও অনুপমের দাবি, “আমাদের মন্দিরে নাবালিকা বিয়ে দেওয়া হয় না। পাত্র-পাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র দেখার পাশাপাশি অভিভাবককে রেজিস্টারে সই করতে হয়।” তিনি বলেন, “তবে আজকের সময়ে এই ধরনের কর্মশালার খুবই প্রয়োজন।”

জেলার শিশু-সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক অনিন্দ্য দাস বলছেন, “যেমন করেই হোক নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইমাম-পুরোহিতদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। আমরা সেটাকেই কাজে লাগাতে চাইছি।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement