—ফাইল চিত্র।
পুর নির্বাচন এখনও দূরে। কিন্তু তলে তলে তার একটা প্রচ্ছন্ন ছায়া ছড়িয়েছে পার্টি অফিসে, দলীয় বৈঠকে, কর্মীদের পারস্পারিক আলোচনায়। ‘এসে তো গেল’— দলের অন্দরে প্রস্তুতির মৃদু মহড়া বুঝি শুরু হয়ে গেছে।
ইতিমধ্যে পুর ভোটকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে ঘর গোছাতে শুরু করেছে তৃণমূল। গত সপ্তাহে শাসকদলের মহিলা সংগঠন পুরভোটকে সামনে রেখে সম্মেলন করেছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর শাসকদলের জেলা কমিটির বৈঠকেও পুরভোট নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা। খুব পিছিয়ে নেই বিরোধীরাও।
বছর খানেক আগে বহরমপুর পুরবোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। সে সময় পুরভোট না করে প্রশাসক হিসেবে বহরমপুরের মহকুমাশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এ বার সেখানে নির্বাচন। মে মাসে মেয়াদ শেষ হচ্ছে মুর্শিদাবাদের ডোমকল ছাড়া বাকি ৬টি পুরসভার। এই পরিস্থিতিতে শাসকদলের পুরসভা নির্বাচন নিয়ে দৌঁড়ঝাপ শুরু করে দেওয়ায় অনেকেই মনে করছেন, এ বারে পুরসভাগুলিতে নির্বাচন হতে পারে সব ক’টিতেই এবং এক সঙ্গে। গত সপ্তাহে বহরমপুরের মহিলা তৃণমূলের সভায় সে বার্তা দিয়ে গিয়েছেন মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী তথা মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মঞ্চে বসিয়ে, জেলা মহিলা তৃণমূলের সভাপতি শাহনাজ বেগম মহিলা কর্মীদের পুরভোটের প্রস্তুতির নিদান দেন। মহিলা কর্মীদের বাড়ির হেঁশেলে ঢুকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের প্রকল্পগুলি মহিলাদের সামনে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘এই ধরনের সম্মেলনে পুরভোটের প্রস্তুতি হিসেবেই ভাবছি।’’
আগামী ১৫ ডিসেম্বর জিয়াগঞ্জে দলের জেলা কমিটির বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে অন্য কর্মসূচির পাশাপাশি পুরভোট নিয়ে আলোচনা হবে। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান বলছেন, ‘‘১৫ ডিসেম্বরের বৈঠকে পুরসভা নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হবে।’’
পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। বছর দেড়েক আগে বহরমপুর শহর কংগ্রেসের সভাপতি অতীশ সিংহের মৃত্যুর পরে কার্তিকচন্দ্র সাহাকে আহ্বায়ক করা হয়। পুরভোটের কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি কার্তিক সাহাকে দলের শহর সভাপতি করে শহর কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘জেলার সব শহরে ওয়ার্ড ও শহর কমিটি রয়েছে। সব জায়গায় যে কোনও সময়ে পুর ভোটের জন্য প্রস্তুত রয়েছে দল। নিয়মিত দলের কর্মসূচিও নেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূল যতই দৌঁড়ঝাপ করুক, ভোট কবে হবে এক মাত্র তাঁদের দলনেত্রী জানেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আগে তো তৃণমূল সরকার সময়মতো ভোট ঘোষণার সাহস দেখাক!’’
পুরভোটে কী বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হবে? সে প্রশ্ন অবশ্য এখনই ভাঙতে চায়নি কংগ্রেস। বিজেপিও পিছিয়ে নেই। গত জুলাই মাস থেকে সদস্য সংগ্রহ অভিযান থেকে দলের বুথ, মণ্ডল কমিটির নির্বাচন শুরু হয়েছিল। তা শেষ হয়েছে সদ্য। বিজেপি’র মুর্শিদাবাদ (দক্ষিণ) জেলার সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলছেন, ‘‘বুথ কমিটি, মণ্ডল কমিটি গড়া হয়েছে। পুর নির্বাচন করানোর জন্য দলের যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জামির মোল্লা বলছেন, ‘‘আমাদের সব পুরসভাতেই সাংগঠনিক কাজকর্ম হচ্ছে। আমরা সব সময় মাঠে ময়দানে আছি। সরকার আগে পুর নির্বাচন ঘোষণা তো করুক।’’