লেগেই রয়েছে যানজট। পথ চলা দায়।—নিজস্ব চিত্র
• শহর ঘেঁষে চলে গিয়েছে চূর্ণি। সংস্কার না হওয়ায় নাব্যতা কমে গিয়েছে। ফলে ফি বর্ষায় দু’কূল প্লাবিত হয়। অনেকেই অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হন। রেহাই পেতে পুরসভা কী কিছু করতে পারে না?
সুজিত মণ্ডল, ৬ নম্বর ওয়ার্ড
শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বাস্কো খাল সংস্কার করা হয়েছে। ফলে এই সমস্যায় খানিক লাগাম টানা গিয়েছে। চূর্ণি সংস্কারের বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে।
• শহরে পানীয় জলের সমস্যা চরমে। বাড়িতে যে জল আসে তা পানের অযোগ্য। দীর্ঘদিন ধরে শুনছি বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে। বাড়িতে বাড়িতে জলের লাইন দেওয়া হবে। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও কিছুই হচ্ছে না। সমস্যার সমাধান কি আদৌ হবে?
তরুণকান্তি নাহা, ১১ নম্বর ওয়ার্ড
এখন ক্যালেন্ডার মেনে কাজ করতে হয়। প্রথমে জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করব বলে ঠিক করা হয়েছিল। সেই মতো কাজও চলছিল। প্রায় তিন মাস ধরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া চলেছে। যে কারণে জল প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়নি। খুব শীঘ্রই সেই কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
• শহরের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী রামনগর এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য একটা ঝুলন্ত সেতু রয়েছে। সেটির অবস্থা ভাল নয়। যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুটি সংস্কার করা যায় কি?
মহাদেব ঘোষ, ৮ নম্বর ওয়ার্ড
এ বিষয়ে আমাদের বিশেষ কিছু করার নেই। সেতুটি পূর্ত দফতর দেখভাল করে। দুর্ঘটনা এড়াতে তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
• শহররে মধ্য দিয়ে গিয়েছে রেলপথ। যার একদিকে রথতলা রেলগেট এবং অন্য দিকে, রয়েছে চাবি রেলগেট। একবার এই গেটগুলো বন্ধ হলে খুলতে দেরি হয়। এ জন্য, পূর্বপাড়ের পড়ুয়া ও মানুষকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এই দুই জায়গায় দু’টি ফ্লাইওভার দরকার। সেটা নিয়ে পুরসভা কি কিছু ভাবছে?
রতন দেবনাথ, ৮ নম্বর ওয়ার্ড
বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দু’টি ফ্লাইওভার হলে ভাল হয়। সেগুলি যাতে হয় তার চেষ্টা করব।
• যানজটের কারণে শহরের রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। পুরসভা এ নিয়ে নিয়ে ভাবছে?
মিহির মিত্র, ৪ নম্বর ওয়ার্ড
পুরনো শহর। তাই কিছু সমস্যা রয়েছে। কুপার্সে বাইপাস রাস্তা হচ্ছে। সেই রাস্তা দিয়ে বড় বড় গাড়ি যাতায়াত করবে। তা হলে খানিকটা সমস্যা মিটবে। এ ছাড়াও এখন শহরের মধ্য দিয়ে বাস চলাচল করছে, তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। সবদিক দিয়ে শহরকে যানজট মুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
থমকে রবীন্দ্রভবন তৈরির কাজ।
• শহরে নিকাশি ব্যবস্থা ভাল নয়। একটু বৃষ্টি হলেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যায়। সেই জল বের হতে বেশ সময় লাগে।
শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ৯ নম্বর ওয়ার্ড
নর্দমা নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা থাকতে পারে না। সমস্যা হচ্ছে মানুষের সচেতনতা নিয়ে। অধিকাংশ সময় তারা সেতুর মধ্যে অনেকে প্লাস্টিক ফেলেন। সেই প্লাস্টিক জমে গিয়ে জল যেতে সমস্যা হয়। আমরা সকলে বিষয়টি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করলে আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
• নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে মশার অত্যাচারে অতিষ্ট হতে হয়। এই বিষয়ে কারও কোনও কোন হেলদোল চোখে পড়ছে না।
বাপি পাল, ১২ নম্বর ওয়ার্ড
অভিযোগ ঠিক নয়। নিকাশিনালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। কয়েক দিন আগে সপ্তাহব্যাপী শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মাঝে মাঝে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা হয়। ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়।
• জাতীয় সড়কের পাশে একটি বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। বিভিন্ন রুটের সরকারি ও বেসরকারি বাস এখান থেকে ছাড়ে। বাসস্টান্ডের বেহাল অবস্থা। কিছুই নেই বললে ভুল বলা হবে না। মানুষকে সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কি কোনও পরিকল্পনা আছে?
উৎপল চক্রবর্তী, ১০ নম্বর ওয়ার্ড
বাসস্টান্ডটিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে যাত্রীদের দাঁড়ানো ও বসার জায়গা করা হবে। এ ছাড়াও, অন্যান্য পরিষেবার মান আরও বাড়ানো হবে।
• শহর জুড়ে অবাধে চলছে টোটোর দৌরাত্ম্য। কোথাও দাঁড়ানোর উপায় নেই। মাঝে মাঝেই টোটোর কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে পুরসভা কি ভাবছে?
কুঞ্জবন বিশ্বাস, ৮ নম্বর ওয়ার্ড
বাইরের টোটো শহরে ঢুকে পড়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে আমরাও চেষ্টা চালাচ্ছি। যাতে কেউ বিপদে না পড়েন তা দেখতে হবে।
• শহরে কয়েকটি গ্রন্থাগার রয়েছে। পড়ুয়াদের কথা ভেবে পাঠ্যপুস্তক ও সহায়ক বই রাখলে ভাল হয়। পুরপ্রধান এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে অনেকে উপকৃত হবেন।
শঙ্কররলাল মিত্র, ৭ নম্বর ওয়ার্ড
ভাল প্রস্তাব। এটা আমাদের মাথাতেও রয়েছে। রানাঘাট মহকুমার গ্রন্থাগারে এ ধরনের বই যাতে রাখা হয় তা দেখব।
• মহিলাদের স্বনির্ভর করার বিষয়ে পুরসভা কি করেছে? আগামী দিনে আরও কী পরিকল্পনা রয়েছে তা জানতে পারলে উপকৃত হতাম।
কোহিনুর বিবি, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড
পুরসভা এলাকায় ২৯১টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তার মধ্যে গুটিকয়েক একটু দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেগুলোকে সচল করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আরও ৮০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়া হবে।
• শহরের পূর্বপাড়ে সেই অর্থে স্বাস্থ্য পরিষেবা বলতে কিছু নেই। কেউ অসুস্থ হলে কমবেশি তিন কিলোমিটার দূরে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিতে যেতে হয়। এখানে স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করলে দুর্ভোগ কমত।
তপন দাস, ১৬ নাম্বার ওয়ার্ড
একসময় পূর্বপাড়ে হাসপাতাল ছিল। সেটা খুব ভালভাবেই চলত। কিন্তু তা শেষ রক্ষা করা যায়নি। বাম আমলেই শেষ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাইছি সেখানে ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটা হাসপাতাল করতে। আশা করছি এতে সমস্যা কমবে।
• এক সময় রানাঘাট খেলাধূলায় মান খুব ভাল ছিল। মাঝে সেই তা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। খেলার মান বাড়াতে পুরসভা কি উদ্যোগ নিয়েছে?
দীপন চোঙদার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড
পুরসভা একটি অ্যাকাডেমি পরিচালনা করছে। সেখানে ফুটবল, ক্রিকেট, খোখো ও ভলিবল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ছেলেমেয়েরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
• হ্যাপি ক্লাব মাঠে বিশেষ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিমা বিসর্জনে সমস্যা হয়। সে বিষয়ে পুরসভার কি কোনও ভাবনা চিন্তা আছে?
রাম শি, ১ নম্বর ওয়ার্ড
এ বারে ট্রলির ব্যবস্থা করা হবে। ট্রলির উপরে প্রতিমা তুলে খুব সহজেই চূর্ণি নদীতে বিসর্জন দেওয়া যাবে।