বিজেপি নেতার বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র
উপনির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়াল রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায়। সেখানে বিজেপি নেতাদের বাড়িতে ঢুকে মারধর এবং ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজ্যের শাসকদল অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে অশান্তির জন্য পদ্মশিবিরকেই দায়ী করেছে।
বিজেপির অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের পায়রাডাঙা এলাকায় একাধিক বিজেপি নেতার বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত হন বিজেপির এক পঞ্চায়েত সদস্য। বিজেপির দাবি, তাদের নির্বাচনী এজেন্ট শ্রাবন্তী দে-র বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। পায়রাডাঙার গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য গৌতম বিশ্বাসকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় রানাঘাট হাসপাতালে ভর্তি তিনি। এই ঘটনায় দু'ঘণ্টার মধ্যে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং পুলিশ সুপারের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অশান্তির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উপদ্রুত এলাকায় পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্য পুলিশ টহলও দিচ্ছে সেখানে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মনোজ বিশ্বাস বলেন, “তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা মঙ্গলবার রাত থেকেই বিজেপি এজেন্ট এবং সক্রিয় কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে মারধর, ভাঙচুর চালিয়েছে। প্রমাণ লোপাট করতে এলাকার সিসি ক্যামেরাগুলি ভেঙে দেয় দুষ্কৃতীরা। আসলে তৃণমূল নেতাদের মদতপুষ্ট ওই দুষ্কৃতীরা যে কোনও প্রকারে ভোটে কারচুপি করতে চাইছে।” তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমনি অধিকারীর পাল্টা মন্তব্য, “আমাদের কেউ সন্ত্রাস ঘটিয়েছে, এমন খবর জানি না। তবে তৃণমূল যে এলাকাগুলোয় শক্তিশালী, সেখানে বজরং দল নামে একটি সংগঠনের উচ্চিংড়ে নেতারা গিয়ে অশান্তি করার চেষ্টা করছেন। আমরা বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনেছি।”
সকাল ৭টায় শুরু হয়েছে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। সকাল থেকে মোটের উপর ভোট শান্তিপূর্ণ। দু’একটি বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ছাড়া, সে ভাবে কোনও বড় ঘটনার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসেনি। একটি জায়গায় ইভিএমে সমস্যা হওয়ার কারণে ভোটগ্রহণ শুরু হতে দেরি হয়। এই বিধানসভা এলাকার নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ ছাড়াও রয়েছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ বাহিনী। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে পদ্মপ্রার্থী হিসাবে রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে জয়ী হওয়া মুকুটমণি অধিকারী লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। যদিও তিনি বিজেপির জগন্নাথ সরকারের কাছে হেরে যান। উপনির্বাচনে ফের মুকুটমণিকেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল। লোকসভার ফলের নিরিখে এই বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।