ফুটবলকে আধারে বেঁধে জনসংযোগের রাস্তা খুঁজছে জেলা পুলিশ।
গ্রামীণ অন্তরে বন্ধু গড়ে প্রান্তিক এলাকায় পা রাখার পুলিশি ছল নতুন নয়। সে জন্য ফুটবলকে হাতিয়ার করে বছর কয়েক ধরেই এগোচ্ছিল জেলা পুলিশ। কিন্তু তাতে আধার কার্ডের প্রয়োজন পড়ল কেন?
জেলা পুলিশের এক কর্তা ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘আধারের পরিচয়ে মানুষটার আদ্যপান্ত জানা য়ায়। যোগাযোগের সূত্রটাও পাকাপোক্ত হয়, তাই পুলিশি ফুটবলে অংশ নেওয়া ফুটবলারদের আধারটুকু পুলিশের হাতে থাকলে প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের রাস্তাটাও আর হাতড়াতে হবে না।’’
সীমান্তের জেলায় বোমা, জাল নোট কিংবা পাচারের রমরমা নতুন নয়। সে জন্য সর্বক্ষণের নজরদারিটা বড় প্রয়োজন। কিন্তু থানা থেকে সব সময় ছুটে গিয়ে সে সব সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না। আধার-বন্ধ পুটবলাররাই সে ক্ষেত্রে পুলিশের সোর্স হয়ে উঠতে পারেন, এমনই মনে করছেন পুলিশের কর্তারা।
সে কথা অবশ্য মুখে বলছেন না জেলা পুলিশের তাবড় কর্তারা। সাগরদিঘি থানার ওসি জামালুদ্দিন মন্ডল অবশ্য বলছেন, ‘‘এলাকায় ফুটবলের চর্চা বাড়ুক এটাই পুলিশের লক্ষ্য। মানুষের মন জয় করতেই এই উদ্যোগ।’’ তবে আসল কথা ফুটবলের মাধ্যমে পুলিশের সোর্স গড়ে তোলা।
সোর্স গড়তে বছর কয়েক ধরেই জেলা পুলিশ যে হিমশিম খাচ্ছে জেলা গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্টে কিছুদিন আগেই তা স্পষ্ট করা হয়েছিল। ফুটবলের আড়ালে সেই জনসংযোগ গড়ে পুরনো সোর্সটা ঝালিয়ে নিতেই ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন। কিন্তু তার পরেও ফাঁক থেকে যাচ্ছিল বেশ।
জেলার এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘আধারে সেই ফাঁকটা অনেকটা সামলানো যাবে।’’
আশপাশের শ’খানেক গ্রামের ৬৪টি ক্লাবকে সঙ্গে নিয়ে শনিবারসাগরদিঘিতে যে পুলিশ-ফুটবল শুরু হয়েছে তাতে প্রতিটি ফুটবলারের আধার কার্ড দেখে নেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ ওই খেলুড়েদের সঙ্গে স্থায়ী যোগাযোগের একটা উপায়ও ধরে রাখা যাবে এই সূত্রে।
কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে তার খবর সহজে পুলিশের কাছে পৌঁছে যাবে যেমন তেমনি তাদের প্রয়োজনেও পুলিশ পৌঁছে যাবে তাদের পাশে। প্রচারে এটুকুই বলা থাকছে। স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ যত বাড়বে পুলিশের কাজ করতে তত যে সুবিধে হবে তা মানছেন পুলিশ কর্তারা।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অংশুমান সাহা বলেন, ‘‘জনসংযোগ বাড়াতে জেলা জুড়েই ফুটবল প্রতিযোগিতা চালু করেছে পুলিশ। তবে সাগরদিঘিরটাই সবচেয়ে বড়। জনসংযোগ বাড়লে অপরাধ কমে। সেই লক্ষ্যে গাঁ গঞ্জে ছেলেদের ফুটবলে সামিল করা হচ্ছে।’’
সাগরদিঘি চ্যালেঞ্জ কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত প্রাক্তন ফুটবলার অরূপ মণ্ডল বলছেন, “জনসংযোগ বাড়ানোর উদ্দেশে পুলিশের এই আয়োজন।’’