বাবা-মায়ের সঙ্গে অভয় কুমার। করিমপুর থানায়। নিজস্ব চিত্র
রাতে রাস্তায় ঘোরাফেরা করছিলেন অচেনা যুবক। হিন্দিভাষী। তাঁর চালচলন দেখে গাঁয়ের লোকজন বুঝে যান, মানসিক ভারসাম্য ঠিক নেই। তাঁরা থানায় খবর দেন। বাড়ির লোককে খুঁজে বের করে শুক্রবার সেই যুবককে উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে ফেরাল করিমপুর থানা।
যুবকটির নাম অভয় কুমার। বয়স বছর সাঁইত্রিশ। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় জেলার লছিপুরে। ঘুরতে-ঘুরতে তিনি করিমপুরে চলে এসেছিলেন। গাঁয়ের লোকের কাছে খবর পেয়ে সোমবার সকালে এএসআই শ্যামল বাগদি তাঁকে থানায় নিয়ে যান। থানায় এনে স্নান করিয়ে আগে খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুটা ধাতস্থ হওয়ার পরেও পরিষ্কার করে তিনি কিছুই বলতে পারছিলেন না।
ঘটনাচক্রে, অভয়ের কাছে তাঁর আধার কার্ড ছিল। কিন্তু তাতে জেলা বা রাজ্যের নাম ছিল না। পুলিশ ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তাতেই প্রতাপগড়ে রানিনগর থানার খোঁজ মেলে। অভয়ের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত পাঠানো হয়। সেখানকার পুলিশ গ্রামে গিয়ে তাঁর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়। খবর পেয়ে অভয়ের বাবা রামদাস, মা ইসরাউতি দেবী ও ছোট ভাই ধর্মানন্দ মঙ্গলবার সকালে রওনা দেন। বৃহস্পতিবার করিমপুর থানায় এসে পৌঁছন তাঁরা। রামদাস জানান, তাঁর তিন ছেলের মধ্যে অভয় বড়। বাড়িতে অভয়ের স্ত্রী ও তিন ছেলে রয়েছে। তিনি মাঝেমধ্যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন, পরে আবার ঠিকও হয়ে যায়। আগেও কয়েক বার হারিয়ে গিয়ে দু’দিন পরে বাড়ি ফিরেছিল। ৬ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। বহু খুঁজেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। থানায় রাত কাটিয়ে শুক্রবার সকালে অভয়কে সঙ্গে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের দিকে রওনা দেন রামদাসেরা।
নদিয়ার পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে পুলিশের এই ধরনের মানবিক কাজ খুবই প্রশংসনীয়। আগামী দিনে অন্য থানাও এতে অনুপ্রাণিত হবে।’’