—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ক্যানসার আক্রান্ত এক আত্মীয়া। তাঁর প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে যাওয়ার পথে রাজ্যসড়কে কর্তব্যরত এক সাব-ইনস্পেক্টর এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তুলে থানায় গেলেন ডোমকল পুরসভার এক কর্মী। অভিযোগ, পুলিশের মারে কান এবং মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। এমনকি, চিকিৎসা করাতে গেলেও তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ‘নিগৃহীত’ পুরকর্মী। মঙ্গলবার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুরসভার ওই কর্মী জানিয়েছেন গত শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ যাচ্ছিলেন তিনি। হাসপাতালে তাঁর এক আত্মীয় ভর্তি রয়েছেন। ক্যানসার আক্রান্ত ওই রোগীর জন্য ওষুধ নিয়ে যাচ্ছিলেন। তা ছাড়া টাকাপয়সার প্রয়োজন ছিল। ওষুধ নিয়ে মোটর বাইকে যাওয়ার সময় রাস্তায় তাঁকে আটকান কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিন সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর পরেও কিছু অভিযোগ এনে মোটা অঙ্কের ‘জরিমানা’ চাওয়া হয়। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই পুলিশ আধিকারিক এবং সিভিক ভলেন্টিয়াররা মিলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। অসুস্থ অবস্থায় তিনি ডোমকল মহাকুমা হাসপাতালে যান। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছনোর পর আর এক সমস্যা। চিকিৎসককে ওই ঘটনার বিন্দুবিসর্গ বলা যাবে না বলে চাপ দেন ‘অভিযুক্তরা’। এর পর পুলিশের চাপে কার্যত চিকিৎসা না করিয়েই তাঁকে ছেড়ে দেন চিকিৎসকেরা। সেখান থেকে বেরিয়ে মানবাধিকার সংগঠনের দ্বারস্থ হন পুরকর্মী। পরে কয়েক জন আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন।
মঙ্গলবার ডোমকল মহাকুমা পুলিশ আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পুরকর্মী। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও আমার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হয়। দেব না বলাতে পুলিশ আধিকারিক এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা মিলে কিল, চড় এবং ঘুষি মারতে শুরু করেন। আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দিয়ে বলা হয় যে, ডাক্তারকে কিছু বললে পুনরায় মারা হবে। আমি ওই পুলিশ আধিকারিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’
অন্য দিকে, অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের দাবি, প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় নির্দিষ্ট আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ করে বদনাম করা হচ্ছে আমাদের।’’ তাঁর শাস্তির দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর জানিয়েছে, ‘‘আইনের রক্ষকদের এ ভাবে আইন ভাঙার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হব আমরা।’’