জমি নিয়ে ধুন্ধুমার, আক্রান্ত পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে শনিবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার মিঠিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর মোড়। দুই পরিবারের বিবাদ থামাতে গিয়ে আক্রান্ত রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। উত্তেজিত জনতার আক্রমণে মাথা ফাটে রঘুনাথগঞ্জ থানার এক সহকারী সাব–ইন্সপেক্টরের। এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ইতিমধ্যে চার মহিলা-সহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দশটি বাইক। গ্রামে উত্তেজনা থাকায় রঘুনাথগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রঘুনাথগঞ্জের বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা ফানসুর শেখ নামে এক যুবক সম্প্রতি তাঁর দূর সম্পর্কের আত্মীয় কালাবুল শেখের সঙ্গে জমি কেনার জন্য একটি চুক্তি করেন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ঠিক হয়, রঘুনাথগঞ্জের মিঠিপুরের বাসিন্দা কালাবুল তাঁর নিজের ৪ শতক জমি ফানসুরকে বিক্রি করবেন। সেই জমি কেনার জন্য পেশায় ব্যবসায়ী ফানসুর ইতিমধ্যেই কালাবুলকে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছেন বলে দাবি। তবে টাকা অগ্রিম নেওয়ার পর সম্প্রতি কালাবুল নিজের মত পরিবর্তন করেন এবং ফানসুরকে জমি বিক্রি করতে অস্বীকার করেন। সূত্রের খবর, টাকা অগ্রিম নেওয়ার পর জমি বিক্রি না করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে কালাবুল এবং ফানসুরের মধ্যে গোলমাল বাধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে ফানসুর মুকুন্দপুর মোড়ে নিজের দোকানে বসেছিলেন। সেই সময় কালাবুল একাধিক বাইকে মিঠিপুর থেকে কয়েক জনকে নিয়ে এসে ফানসুরের উপর চড়াও হন। অভিযোগ, কালাবুল সেখানে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি ফানসুর এবং তাঁর এক ভাইকে বেধড়ক মারধরও করেন। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ওই এলাকায় যায় দোকানে আটকে থাকা যুবকদের মুক্ত করতে। অভিযোগ, পুলিশ পৌঁছতেই কালাবুলের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন পুলিশের উপরেও হামলা চালায়। মাথা ফাটে রঘুনাথগঞ্জ থানার এএসআই কিশোর ঘোষের। চিকিৎসার জন্য তাঁকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্থানীয় মানুষের একাংশের দাবি, মুকুন্দপুর মোড়ে দোকানের মালিকানা নিয়ে বিবাদের জেরেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উপর হামলার খবর পেয়ে রঘুনাথগঞ্জ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী এবং র্যাফ এলাকায় পৌঁছয়। লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। তার পর উদ্ধার করা হয় দোকানে আটকে থাকা লোকজনকে। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘‘পুলিশের উপর হামলার ঘটনা এবং এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ইতিমধ্যে চার মহিলা-সহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দশটি মোটরবাইক।’’
গ্রামে উত্তেজনা থাকায় মোতায়েন রয়েছে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশবাহিনী।