উদ্ধার মোবাইল। নিজস্ব চিত্র।
মোবাইল চুরি ও উদ্ধারের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কিন্তু শুক্রবার গভীর রাতে বাসে নিরীহ মুখে বসে থাকা দুই যুবকের কাছ থেকে যে ৭৭টি চোরাই মোবাইল মিলতে পারে, তা ভাবেননি জঙ্গিপুরের পুলিশকর্তারা। ধৃত দুই যুবকের নাম মোস্তাফিজুর রহমান ও নাসিউল শেখ। তাদের বাড়ি মালদহের কালিয়াচকে। ধৃতদের কাছ থেকে মিলেছে বিভিন্ন সংস্থার ৩১টি সিম কার্ডও।
পুলিশ জানায়, মুম্বই থেকে এই সব চোরাই মোবাইল নিয়ে কালিয়াচকে যাচ্ছিল তারা। সেখানে এক মোবাইল বিক্রেতার কাছে সেগুলি দেওয়ার কথা ছিল তাদের। তার আগেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে রঘুনাথগঞ্জ থানার উমরপুর মোড়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় দু’জন। দীর্ঘদিন ধরেই তারা চোরাই মোবাইলের এই কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল বলে পুলিশের সন্দেহ। মোবাইল চুরির বড়সড় চক্র তারা তৈরি করেছে বলেও প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ পুলিশের।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ কাররা জানান, জেলা পুলিশের সাইবার অপারেশন টিম ও রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ যৌথভাবে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে উমরপুরে তল্লাশি চালাচ্ছিল। শেষ রাতে একটি বাস থেকে ধরা হয় দু’জনকে। তাদের পিঠে ছিল স্কুলব্যাগ। সেই দু’টি ব্যাগ থেকেই মেলে ৭৭টি দামি মোবাইল ফোন। মুম্বই থেকে সেগুলি আনা হচ্ছিল কালিয়াচকে। চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকিদের ধরার চেষ্টা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, মুম্বইয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোবাইল ফোনগুলি চুরি করা হয়েছিল। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি মোবাইল নতুন এবং দাম লক্ষাধিক টাকার বেশি। মুম্বই থেকে মোবাইলগুলি নিয়ে ট্রেনে তারা এসে নামে বর্ধমান স্টেশনে। সেখান থেকে মালদহগামী বাস ধরে তারা। গোপনে খবর আসে জঙ্গিপুরের সাইবার অপরাধ দমন শাখায় যে তারা চোরাই মোবাইল নিয়ে আসবে। এরপরই রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রাত ১২টা থেকে উমরপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বাসগুলিতে তল্লাশি শুরু করে তারা। ভোররাতের দিকে একটি বেসরকারি বাসে দুই যুবকের খোঁজ পায় পুলিশ।
তাদের পিঠে থাকা স্কুল ব্যাগ দেখে সূত্রের দেওয়া খবরের ব্যাপারে নিশ্চিত হয় পুলিশ। ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে পড়ে একের পর এক মোবাইল ফোন। গুনে দেখা যায় ৭৭টি মোবাইল রয়েছে তাদের ব্যাগে। রয়েছে ৩১টি সিম কার্ডও। পুলিশের সন্দেহ, এইসব সিম কার্ডগুলি পুরনো মোবাইলগুলিতে ভরা ছিল। পুলিশ ‘লোকেশন ট্র্যাক’ করতে পারে ভেবে তারা সেগুলি মোবাইল থেকে খুলে রেখেছিল। তাদের হেফাজতে আরও বহু চোরাই মোবাইলের হদিস মিলেছে। সেগুলি উদ্ধারের জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।