ধৃত এরশাদ শেখ। নিজস্ব চিত্র
গুলিতে দু’জনের জখম হওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম এরশাদ শেখ। তাঁকে বৃহস্পতিবার রাতে ভীমপুর থানার মহেশপুর থেকে ধরা হয়।
পলাশিপাড়া থানার বাগাগড়িয়ায় বৃহস্পতিবার জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে দু’জনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রের খবর, জলিলা বেওয়া নামে এক বাসিন্দার একটি জমি রয়েছে। সেই জমির উপর দিয়ে ইউনিস মোল্লা নামে এক জন রাস্তা করবেন বলে দাবি করেন। জলিলা রাজি হননি। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ ইউনিসের হয়ে গোলমাল করতে আসে আজমীর হালসানা ও এরশাদ শেখ।
অভিযোগ, বচসা চলাকালীন জলিলা বেওয়ার কয়েক জন আত্মীয়কে মারধর করে এরশাদ ও আজমীর। তার পর পিস্তল বের করে ভয় দেখানো শুরু করে। এই সময় বাজার থেকে জলিলা বেওয়ার এক আত্মীয় ঝন্টু মোল্লা ফিরছিলেন। আচমকা তাঁর দিকে তাক করে গুলি চালিয়ে দেয় আজমীর। ঝন্টুর পিঠে গুলি লাগে। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে পলাশিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় কিছু মানুষ। সেখান থেকে রেফার করা হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। পরে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। জলিলার আরেক পরিচিত শুকলালের বাড়ি এর পর চড়াও হয় এরশাদ শেখ। শুকলালের হাতে গুলি লাগে। পলাশিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়।। তাঁকেও শক্তিনগরে রেফার করা হয়েছে।
খবর পেয়ে তেহট্টের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শান্তনু সেন ও পলাশিপাড়া থানার ওসি প্রদ্যুৎ চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে যান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকট হয় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কারণ, অভিযোগকারী ও অভিযুক্তেরা স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ এবং এই দুই নেতার মধ্যে বিবাদ বর্তমানে তুঙ্গে বলে অভিযোগ। বিবাদমান তৃণমূল নেতাদের এক জন পলাশিপাড়ার বিধায়ক তাপস সাহা এবং অন্য জন তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি তরুণ ঘোষ চৌধুরী। যদিও বিরোধের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তাপস সাহা। বলেছেন, ‘‘এটা গ্রাম্য জমিবিবাদ।’’ কিন্তু তরুণ ঘোষ মন্তব্য করেছেন, ‘‘যারা গুলি চালিয়েছে সেই এরশাদ শেখ ও আজমীর হালসানা সমাজবিরোধী। আমাকে সরিয়ে ওদেরই এলাকার দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিধায়ক। ওদের জন্য আমাদের দুই নিরীহ কর্মী গুলিবিদ্ধ হলেন। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিক।’’
তদন্তে নেমে পুলিশ খবর পায়, ভীমপুর এলাকায় একটা বাড়িতে এরশাদ লুকিয়ে আছে। সেখান থেকে রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ শনিবার তাকে তেহট্ট আদালতে তোলা হবে।