পিঠেপুলির উৎসব। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
এমন ভিড় হবে, তা কল্পনাও করেননি উদ্যোক্তারা। পিঠে খাওয়ার আগ্রহে পৌনে দু’ ঘণ্টাতেই শেষ হয়ে গেল পিঠেপুলি উৎসব।
রঘুনাথগঞ্জ শহরে এই প্রথম এমন পিঠে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। হরিদাসনগর পাড়ার মহিলাদের বাড়িতে তৈরি হরেক রকম পিঠে নিয়ে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রবল শীত উপেক্ষা করেই সেই উৎসবে শামিল হন বাসিন্দারা। সন্ধ্যার পর ভিড় এতটাই বাড়ল যা কল্পনাতেও ছিল না উদ্যোক্তাদের। চেটে-পুটে নানা স্বাদের পিঠে খেল কচিকাঁচারা। পিঠে চাখা থেকে বাদ যাননি প্রবীণরাও।
এই পিঠে-পুলি উৎসব যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত সেই পুনম বারিকের বাড়ি পাশে রাজানগর গ্রামে। বিবাহ সূত্রে তিনি বর্তমানে রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি জানান, ঠাকুরমা এবং মার কাছেই পিঠে বানানো শিখেছিলেন তিনি। তাঁর হাতে তৈরি পিঠে খেয়ে প্রশংসা করেছেন অনেকেই। তাতে অনুপ্রাণিত হয়েই গোডাউনপাড়ায় পিঠেপুলি উৎসব আয়োজনের ভাবনা মাথায় আসে। পুনম বলেন, ‘সব এলাকাতেই ইদানীং এ ধরনের উৎসব হয় শীতকালে। কিন্তু জঙ্গিপুরে কোথাও এতদিন তা হয়নি। সেই ভেবেই গত বছর উদ্যোগী হয়েছিলাম। কিন্তু সে ভাবে সাড়া মেলেনি। এ বার শামিল হন অন্তত ৩০ জন মহিলা।’’ তিনি জানান, প্রত্যেকেই নিজের পছন্দের পিঠে ঘরে বানিয়েছেন। ৪২ রকমের পিঠে-পুলি মিলিয়ে অন্তত ২১০ কেজি পিঠে আনা হয়। ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে দাম ধার্য হয়েছিল এ সব পিঠের। বিকিকিনি শুরু হয়েছিল বিকেল ৪টে নাগাদ। পৌনে ৬টা বাজতেই সব পিঠে শেষ। তখনও প্যান্ডোলের সামনে দাঁড়িয়ে শতাধিক ক্রেতা। পুনম নিজে বানান গাজরের হালুয়া, ভাজা পিঠে, দুধপিঠে, মালপোয়া। গার্গী মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলা তৈরি করেন ফিরনি। মাটির ভাঁড়ে তা বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকায়। ক্ষীরের মুগ মালাই বানান একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুমিতা রায়। মৌসুমি দাসের স্টলে ছিল দুধপিঠে, ভাজা পিঠে, সরা পিঠে, ঢাকাই ফল, পাটিসাপটা। প্রবীণ নিরুপমা হালদারের স্টলে ছিল কোকো মালাই, রসপুলি, দই বড়া, পাটিসাপটা। নিরুপমা বলছেন, “ভাবিনি, নিমেষে সব শেষ হবে।’’