বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ব্যথিত জেলা

ভর্তুকিতে ছাঁটাই, অগ্নিমূল্য সার

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার মূলত নাইট্রোজেন (ইউরিয়াতে) সারে ভর্তুকি দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৫
Share:

আমের-আশায়: আম গাছে রাসয়নিক স্প্রে করছেন কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

বাজেটে সারের ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়ায় কৃষি নির্ভর মুর্শিদাবাদের মাথায় হাত।

Advertisement

গত বাজেটে সারে ভর্তুকি ছিল ৭৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। এ বারের তা কমিয়ে ৭১ হাজার ৩০০ কোটিতে নেমেছে। ফলে ভর্তুকিযুক্ত সারের মূল্য কমে যাওয়ায় সারের দাম আকাশ ছোঁবে বলে মনে করছেন জেলার কৃষিজীবী মানুষ।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার মূলত নাইট্রোজেন (ইউরিয়াতে) সারে ভর্তুকি দেয়। ফসফেট, পটাশ সারের জন্যও রয়েছে সামান্য ভর্তুকি। ফলে সরকার নির্ধারিত দামে কৃষকেরা সার কেনেন। বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়ার ফলে সেই সারের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় চাষের ক্ষতি হচ্ছে। কখনও অতিবৃষ্টি, কখনওবা অকাল বৃষ্টিতে ফসলের উৎপাদন কমে গিয়েছে। বন্যার ক্ষতির পরেও ফসল বিমা যোজনা থেকে ক্ষতিপূরণও ঠিক মতো পাচ্ছেন না অনেকেই। বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সেচের খরচও বেড়েছে। এ বারের বাজেটের পরে সারের দাম আরও বাড়বে। এ ভাবে খরচের বহর বাড়তে থাকায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের।

Advertisement

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৯৮ হেক্টর চাষযোগ্য জমি রয়েছে। জেলার প্রায় ৬ লক্ষ কৃষক পরিবার কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। সব চাষেই কম বেশি নাইট্রোজেন সারের দরকার হয়।

ফলে বেশি দামে সার কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন কৃষকেরা। ডোমকলের কৃষক নান্টু মণ্ডল বলছেন, ‘‘চাষের সব ধরনের খরচ আগের থেকে অনেক গুন বেড়েছে। সেই তুলনায় উৎপাদিত ফসলের দাম আমরা পাই না। অনেকে অভাবী বিক্রি করতে বাধ্য হন। ফলে সারের দাম বাড়লে আরও সমস্যা বাড়বে।’’ জলঙ্গির নওদাপাড়ার কৃষক আতাউর রহমান বলছেন, ‘‘ধান-পাট থেকে শুরু করে সব ধরনের চাষে নাইট্রোজেন-সহ অন্য সারের প্রয়োজন হয়। সরকার তা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। সরকার যদি আমাদের পাশে না দাঁড়ায় তবে কে দাঁড়াবে?’’

মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কৃষিদফতরের কর্মাধ্যক্ষ শাহনাজ বেগম বলছেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ কৃষিভিত্তিক জেলা। ফলে সারের দাম বাড়লে তার প্রভাব পড়বে কৃষকদের উপরে। এ ভাবে সারের ভর্তুকি কমিয়ে দিয়ে ঠিক করেনি কেন্দ্র।’’ বহরমপুরের চুনাখালি নিমতলার খুচরো সার ব্যবসায়ী কমল কর্মকার বলছেন, ‘‘ভর্তুকি কমলে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। ফলে কৃষকেরা চাষ থেকে মুখ ফেরাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement