রাত্রিযাপন তাঁবুতেই। নিজস্ব চিত্র
ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা ১০ পরিযায়ী শ্রমিককে গ্রামের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে কোয়রান্টিনে রেখে নজির গড়ে দেখাল সাগরদিঘির দুই আদিবাসী গ্রাম।
সেই পরিযায়ী শ্রমিকের ফেরার পরে বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দেননি পরিজনেরাও।
না, এটা গ্রামের সমাজের মোড়লদের কোনও ফতোয়াও নয়। নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে গ্রামবাসীদের সচেতন সিদ্ধান্ত, যাতে শামিল হলেন ওই সব শ্রমিক পরিবারের বাবা, মা, স্ত্রী ও পরিজনেরাও।
পাশাপাশি দু’টি গ্রাম খেচরডাঙা ও শাওনদিঘি। খেচরডাঙায় বসতি ৬৫ ঘর আদিবাসীর। শাওনদিঘিতে ৩৭ ঘরের বাস। গ্রাম থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে দু’টি ফুটবল খেলার মাঠে অস্থায়ী তাঁবু করে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন গ্রামবাসীরাই। খেচরডাঙায় সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে তাঁবুতে সর্বোচ্চ তিন জন থাকছেন। সেখানেই ওভেন, গ্যাস সিলিন্ডার, পানীয় জলের জার পৌঁছে দিলেন পরিবারের লোকজনেরাই। রান্না বান্না খাওয়া দাওয়া, ঘুম সবই চলছে ৪ দিন থেকে গ্রামের বাইরে তাঁবু ঘেরা সেই কোয়রান্টিনেই। শাওনদিঘি গ্রামে অবশ্য বাড়ি থেকেই যাচ্ছে খাবার তিন বেলার খাবার।
খেচরডাঙার ৪ পরিযায়ী শ্রমিকের ২ জন চেন্নাই থেকে ফেরেন বৃহস্পতিবার। একজন ওড়িশা ও একজন বিহারের জামসেদপুর থেকে ফেরেন শনিবার। সকলেই বাসে করে নিজেদের খরচে ফিরেছেন। শাওনদিঘিতে ৬ জন ওড়িশা থেকে ফেরেন ৮ দিন আগে।
ফেরার পরেই গ্রামের ভিতরে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাতে আপত্তি করেননি শ্রমিকেরাও। তখনই গ্রামের বাইরে মাঠের মধ্যে গ্রামের যুবকেরাই গড়ে দিয়েছেন তাঁবুর ঘর।
খেচরডাঙার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জোটু মার্ডি বলছেন, ‘‘গ্রামের আরও ২০ জন শ্রমিক রয়েছেন বাইরে। তাঁদেরও এ ভাবেই রাখা হবে ১৪ দিন।’’ তবে ঝড়ে তাঁবু কতটা টিকবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। প্রাথমিক স্কুল খুলে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।