নেটহীন নদিয়ায় ভোগান্তি দিনভর

আন্তর্জাল এমনভাবে সকলের মন-মস্তিষ্ক জুড়ে বিস্তারিত যে তাকে ছাড়া এখন অনেকেরই দিনযাপন প্রায় অসম্ভব।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

জীবনে কী একটা যেন নেই। সরকারি নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাত থেকে জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই কথাটাই বার বার মনে হয়েছে নদিয়ার বহু মানুষের। রাতে অবশ্য বেশির ভাগ জায়গায় নেট পরিষেবা ফিরে এসেছে।

Advertisement

আন্তর্জাল এমনভাবে সকলের মন-মস্তিষ্ক জুড়ে বিস্তারিত যে তাকে ছাড়া এখন অনেকেরই দিনযাপন প্রায় অসম্ভব। প্রতি পদক্ষেপে যেন ঠোক্কর খাওয়া। গভীর রাত পর্যন্ত নেটচর্চা বা হোয়াটস অ্যাপে লম্বা চ্যাট না করলে তো এখন ঘুমই আসতে চায় না অনেকের। বৃহস্পতিবার রাতের মতো এত অসহায় কখনও বোধ করেননি নদিয়ার মানুষ। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট পার্থপ্রতিম রায়ের ব্যাখ্যায়, “মানসিক অসুবিধা তাঁদেরই হয়েছে যাঁরা সম্পূর্ণ বা আংশিক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার নেশায় আক্রান্ত। বাকি অনেককেই কিন্তু এই নেটহীনতা ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে বইপড়া বা ছবি আঁকার পুরনো অভ্যাসে।”

“প্রথম যখন জানতে পারলাম নেট বন্ধ থাকবে, কেমন অসহায় মনে হচ্ছিল।”—অকপটে বলেন কলেজ পড়ুয়া শুভজিৎ গোস্বামী। তবে সমস্যা শুধু যে এই প্রজন্মের হয়েছে তা নয়, তাঁদের আগের প্রজন্মের অনেকেও ভুগেছেন বিস্তর। যেমন ‘নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর অন্যতম সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা, “এখন কেনা এবং বেচা দু’টোই মূলত অনলাইনে হয়। সুতরাং ইন্টারনেট বন্ধ মানে গোটা দিন জেলার যাবতীয় বাণিজ্য বন্ধ।”

Advertisement

কিছুতেই স্কাইপে জার্মানির বার্লিনের মারকুস অটের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না সঞ্জীব পাল। কিছু ক্ষণ চেষ্টার পর জানতে পারেন যে, জেলা জুড়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। নেট বন্ধ হওয়ায় মামার বাড়ি এসেও মনখারাপ বছর দশেকের পঞ্চমের। পরীক্ষার ছুটিতে সবে বৃহস্পতিবার গুপ্তিপাড়া থেকে নবদ্বীপ এসেছে সে। শুক্রবার সকাল থেকে তার পৃথিবী অন্ধকার। গেমস নেই। কার্টুন নেই। খাওয়াদাওয়া সব শিকেয়। মামাকে পঞ্চম কেবলই বলে চলেছে “মামা, নেটটা ভরে দাও।” ভাগ্নেকে মামা কী করে বোঝান আর!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement