প্রতীকী ছবি।
আদিবাসী মহিলার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের পর সাগরদিঘিতে যে কাটমানির খেলা চলছে প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট হয়েছে তা। আর তাই এই খেলা বন্ধ করতেই অভিনব রাস্তায় হাঁটল সাগরদিঘি ব্লক।
জেলার প্রায় সব ব্লকই যখন ভুরি ভুরি অভিযোগ পেয়েও হাত গুটিয়ে তখন সাগরদিঘিতে শুরু হয়েছে মাইক প্রচার। সব গ্রামে যাচ্ছে ব্লক অফিসের গাড়ি। প্রতিটি গ্রামে অন্তত ১০/১২টি জমায়েত পূর্ণ জায়গায় প্রচার চলছে কাটমানির বিরুদ্ধে। সর্বত্রই এক কথা কোনও সরকারি প্রকল্পে কাউকে টাকা দেবেন না। যাদের ঘর নেই তাঁরা পাকা ঘর করার জন্য ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে হাতে পাবেন। টাকা না দিলে কোনও সরকারি প্রকল্প থেকে নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দিলে ব্লক অফিসে জানান। নিজে সতর্ক থাকুন, অন্যকেও সতর্ক করুন। প্রচারের পরও গ্রামীণ মানুষের মধ্যে কিছুটা ভয় যেন এখনও কাজ করছে।
সাগরদিঘির পঞ্চায়েত প্রধান অরূপ মন্ডল বলছেন, “গ্রামে মাইক প্রচার হচ্ছে। অফিসে কারা ঘর পাবেন তার তালিকাও টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত অফিস থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে ব্লক অফিসে গিয়ে দেখা করতে। কিন্তু তবু কিছু গ্রামবাসী কখনও কোনও কর্মীর হাতে, কখনও কোনও সদস্যের হাতে দু-পাঁচশো টাকা গুঁজে দিচ্ছেন। অর্থাৎ মানুষের মধ্যেও একটা সংশয় যে এখনও কাজ করছে যে টাকা না দিলে বোধহয় ঘরটা পাব না। এটা দূর করতে এলাকার শিক্ষিতদের এগিয়ে আসা দরকার।”
বোখারা ২ পঞ্চায়েত প্রধান মনিরুজ্জামান দীপু বলছেন, “প্রতিটি এলাকায় বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আছে যারা নিঃস্বার্থে কাজ করেন। উপভোক্তাদের দুর্বলতা তাঁরা লেখাপড়া জানেন না। কী ভাবে আবেদনপত্র লিখবেন, কোথায় যেতে হবে যাতে সহজে কাজটা হয় তা ঠিক মত বোঝেন না। সে জন্যই বখশিস বা ঘুষ দেওয়ার প্রবণতা জন্মে গেছে। কাটমানি আসলে সেটারই মোটা অঙ্ক।” তবে ব্লক অফিসে উপভোক্তাদের সহায়তা করার জন্য এক জন কর্মী মোতায়েন করা আবশ্যক বলে মনে করছেন তিনি। বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু বলেন, “ব্লক অফিসে উপভোক্তাদের সহযোগিতা করার জন্য অবশ্যই কোনও কর্মীকে রাখা হবে। তার আগে মানুষের জানা দরকার সরকারি প্রকল্প তার অধিকার, এর জন্য কানাকড়িও খরচের দরকার নেই।’’