ঘটনার পরে চন্দবাড়ির দোতলায় তদন্তে পুলিশ। সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি। ইনসেটে চন্দ দম্পতির ছেলে রুদ্রাশিস।
খুন হয়ে গিয়েছেন খোদ শান্তিরক্ষক! রেহাই পাননি তাঁর স্ত্রীও। মঙ্গলবার ভোরে এমন জোড়া খুনের খবর পেয়ে একরাশ আতঙ্ক নিয়েই জেগে উঠল কৃষ্ণনগরের পালপাড়া।
মঙ্গলবার গভীর রাতে দুষ্কৃতীরা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে পেশায় পুলিশকর্মী রমাপ্রসাদ চন্দ (৫২) ও তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী চন্দকে (৫০)।
এমন ঘটনার পরে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন পালপাড়ার অনেকেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, একজন পুলিশকর্মী ও তাঁর স্ত্রীকে যদি বাড়িতে ঢুকে এ ভাবে খুন করে চলে যায় দুষ্কৃতীরা, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে?
ঘটনার তদন্ত করতে এসে ডিআইজি (মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ) কল্লোল গণাই বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। যেমন করেই হোক দুষ্কৃতীদের আমরা ধরবই।’’
এ দিন ওই চন্দ দম্পতির বছর পনেরোর ছেলে রুদ্রাশিস মাঝে মধ্যেই ডুকরে কেঁদে উঠছে। বলছে, ‘‘বাবা মাঝেমধ্যেই বলতেন, বাড়িতে কোনও অঘটন ঘটলে ওই সিঁড়ির জানালা দিয়েই কেউ ঢুকবে। বাবার সেই কথাই এ দিন সত্যি হয়ে গেল।’’ সিঁড়ির ওই জানালার স্ক্রু খুলেই এ দিন দুষ্কৃতীরা উপরে উঠে ওই দম্পতিকে খুন করে। মঙ্গলবার রাতে দোতলায় দু’টি আলাদা ঘরে ঘুমিয়েছিলেন ওই চন্দ দম্পতি। তিন তলার ঘরে ছিল রুদ্রাশিস। বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ জয়ন্তীদেবীর ফোন পেয়ে ঘটনার কথা জানতে পারে রুদ্রাশিস। মায়ের ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি সে নীচে নামতে গিয়ে দেখে যে, তার ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ।
শেষ পর্যন্ত দরজা ভেঙে সে যখন নীচে নেমে আসে তখন দেখে দু’টি ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রমাপ্রসাদবাবু ও জয়ন্তীদেবী। সেই অবস্থায় জয়ন্তীদেবী কেনও রকমে বলতে পেরেছিলেন যে, দুষ্কৃতীরা তিন জন ছিল। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কাউকে বাঁচানো যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পড়শিদের সঙ্গে সে ভাবে মেলামেশা করতেন না চন্দ দম্পতি। তবে কারও সঙ্গে তাঁদের বিরোধও ছিল না। বরং এলাকায় একজন পুলিশকর্মী আছেন জেনে ভরসা পেত পালপাড়া।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই পুলিশকর্মী সুদের কারবার চালাতেন। ফলে এটা নিছক কোনও ডাকাতি, নাকি ওই সুদের কারবারের কারণে এমন খুন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।