—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত রবিবার প্রকাশ্যে দিনের বেলায় বহরমপুরের তৃণমূল নেতা সত্যেন চৌধুরী খুন হয়েছেন। সেই খুনের ঘটনার অভিযুক্তদের পুলিশ চিহ্নিত করার দাবি করলেও এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনার তদন্তে পুলিশ কী ব্যর্থ না পুলিশ কোনও কিছু আড়াল করছে এমন প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। শহর জুড়ে সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে। তবে কী কোনও কিছু গোপন করছে পুলিশ? একই সঙ্গে খুনের কারণ কী তা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রশ্ন তুলেছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সত্যেন চৌধুরী কেন খুন হলেন, কারা তাঁকে খুন করল সেটা প্রকাশ্যে আসা প্রয়োজন।
সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘সত্যেন চৌধুরীকে মেরেছে অপরিচিত দস্যুরা, তারা সকলের কাছে পরিচিত নয়। তাই পুলিশের ঘাম ছুটছে। এর ঘাড়ে, তার ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য পুলিশ ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। বহরমপুরের পুলিশ আসল খুনিদের ধরতে পারছে না।’’
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব ফোন ধরেননি, উত্তর দেননি এসএমএসেরও। তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, খুনের ঘটনার তিন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের অপরাধমূলক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু তারা ঘটনার দিনই জেলার বাইরে চলে গিয়েছে। পুলিশের ধারণা, তারা ভিন্ রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছে। তারা সব ফোন বন্ধ রেখেছে। তবে অভিযুক্তদের কাছে পৌঁছনোর জন্য পুলিশ সব ধরনের চেষ্টা করছে।
বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘সত্যেন চৌধুরীকে কারা খুন করেছে সেটা হয় পুলিশ জানে। অথবা কেঁচো খুড়তে কেউটে বেরোবে বলে এখনই তা পুলিশ প্রকাশ্যে আনছে না। অথবা ঘটনার উদ্ঘাটনে পুলিশ পুরোপুরি ব্যর্থ। পুলিশ ব্যর্থতা স্বীকার করে মানুষের কাছে ক্ষমা চাক।’’ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘বহরমপুরের মানুষ আতঙ্ক নয়, শান্তি চান। যে কারওর মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক এবং দুঃখের। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমরাও বলছি পুলিশের দক্ষতা কী কমে গেল? এটা কী আমাদের মেনে নিতে হবে? নাকি শাসকদলের চাপে পুলিশ এগোতে পারছে না? এ ধারণা ও বিশ্বাস বহরমপুরবাসীর মধ্যে ক্রমে বাড়ছে। সেই সঙ্গে শাসকদলের নীরবতাও নানা প্রশ্ন তুলছে। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হোক।’’
বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলছেন, ‘‘পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আমাদের আস্থা বিশ্বাস রয়েছে। তাঁরা খুনিদের ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করবেন।’’ বুধবার জেলা তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করছে। খুনিরা তো ধরা পড়বেই। সেই সঙ্গে যারা পিছন থেকে সত্যেনকে খুন করাল তারাও ধরা পড়বে। এটা নিয়ে বিজেপি ও তাদের দোসর কংগ্রেসকে ভাবতে হবে না।’’
সত্যেন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ শম্ভুরঞ্জন বোস বলেন, ‘‘খুনিদের পুলিশ দ্রুত গ্রেফতার করুক।’’