পুলিশকর্তার বিয়ের কার্ড। নিজস্ব চিত্র
‘নির্মল বাংলা মিশন’ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে মেয়ের বিয়ের বিয়ের কার্ডে প্রচার চালানোর উদাহরণ ছিল। কান্দির বড়ঞার এক বাসিন্দা তাঁর মেয়ের বিয়ের কার্ডে শৌচাগার গড়ার আবেদন জানিয়ে প্রচার চালান তিনি। এবার ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্পের আওতায় হেলমেট মাথায় মোটরবাইক চালানোর ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে নিজের বিয়ের কার্ডে প্রচার করেছেন এক পুলিশকর্তা। তিনি এখন আহিরণ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে। পুলিশ কর্তা সুমিত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘বিয়ের মতো শুভ কাজে নিমন্ত্রণপত্রে একটা ভাল বার্তা দিতে চেয়েছি মাত্র। অন্য ভাবে প্রচার করলে মানুষ গুরুত্ব না দিতেও পারে, কিন্তু বিয়ের কার্ড আমরা সকলেই মনোযোগ দিয়ে পড়ি শুধু নয়, অনেক সময়ে সযত্নে কার্ড রেখে দিই। এখন বিয়ের কার্ডে ওই প্রচার দেখে কয়েক জন মানুষ যদি সচেতন হন, তাহলে বুঝব আমি সফল।’’
বিশ্বাস বাড়ির ছোট ছেলের বিয়ে। ওই পরিবারের শেষ বিয়ে বলে এবার একটু ঘটা করেই আয়োজন হয়েছে বিয়ের। বিয়ের মাস খানেক আগেই পাত্র সুমিত বিশ্বাস পরিবারের লোকজনের কাছে আবদার করেন—সচেতনতা বাড়াতে বিয়ের কার্ডে ইংরেজিতে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ এবং বাংলায় ‘সাবধানে চালাও, জীবন বাঁচাও’ লেখার। পরিবারের লোকজন বিশেষ করে বাড়ির মহিলারা তা শুনে একটু ভ্রু কুঁচকেছিলেন। আমতা আমতা করে বলেন, ‘‘বিয়ের কার্ডে আবার অফিসকে টেনে আনার কি দরকার বাপু! ওসব তোমার কর্মস্থলে করবে।’’ কিন্তু ছোট ছেলের বায়না বলে কথা, সকলেই মেনে নিয়ে লাল কার্ডে মোটা হরফে লেখা হয়েছে ওই স্লোগান। ফলে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’, এবার পুলিস কর্তার বিয়ের কার্ডেও। ওই কার্ড দেখে জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘খুব ভাল হয়েছে। এ ভাবে আমরা সকলে মিলে প্রচার করলে একটা সময় মানুষের মনে গেঁথে যাবে বিষয়টি। নব দম্পতির জন্য আর্শীবাদ রইল।’’
উত্তর ২৪ পরগনার কাটাখালির বাসিন্দা সুমিত বিশ্বাসের বাবা রঞ্জিৎ কুমার বিশ্বাস বলছেন, ‘‘প্রথমে আমরা ব্যাপারটা ভাবতে পারিনি, যেমন গতানুগতিক বিয়ের কার্ড হয় তেমনটাই ভাবনা ছিল আমাদের। কিন্তু ছেলে বললো বাবা বিয়ের কার্ডে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কথাটা লিখতে হবে। আমরাও ভেবে দেখলাম শুভ কাজের কার্ডে ভালো কথা মানুষের জন্য প্রচার করলে মন্দ কোথায়।’’