অবশেষে নড়ে বসল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের কার্তাদের নিয়ে শুক্রবার দুপুরে বহরমপুরে জেলা প্রশাসনিক ভবনে বৈঠক ডাকা হল। ৯৫টি নার্সিংহোমের প্রতিনিধিরা সেখানে হাজির ছিলেন।
বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়— ১) কোন রোগে কত টাকা খরচ হবে, তার ‘রেট চার্ট’ টাঙিয়ে দিতে হবে। ২) বিনা কারণে রোগীকে ভেন্টিলেশনে পাঠিয়ে বাড়তি টাকা আদায় করা চলবে না। ৩) রোগীর বাড়ির লোকজনের অনুমতি ছাড়া কোনও পরীক্ষা করা বা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অভিযোগ পেলে লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলেন, ‘‘নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’’ সেই সঙ্গে ক্লিনিক্যাল এসট্যাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী শয্যা প্রতি চিকিৎসকের সংখ্যা এবং প্রশিক্ষিত নার্স নিয়োগের উপরেও জোর দেওয়া হয়।
বৈঠকে কয়েকটি নার্সিংহোমের ছবি দেখানো হয়েছে। তাতে দেখা যায়, কোনও নার্সিংহোমে ‘বায়ো-মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ নষ্ট না করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলা রাখা হয়েছে। কোনও নার্সিংহোমের আবার ‘লেবার রুম’ নোংরা। তাই ‘বায়ো-মেডিক্যাল ওয়েস্ট ডিজপোজাল সিস্টেম’ তৈরি রাখার পাশাপাশি পরিকাঠামো উন্নয়নের নির্দেশও দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, জেলার অধিকাংশ নার্সিংহোমে পুত্রসন্তানের তুলনায় কন্যাসন্তান প্রসবের সংখ্যা কম। কোনও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ গোপনে লিঙ্গ নির্ধারণ করছেন কি না, তা নিয়ে মহকুমা স্তরে তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে মহকুমাশাসক এবং সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়ে গঠিত কমিটি। অতিরিক্ত জেলাশাসক বিভু গোয়েল জানান, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা এবং স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কাজ ঠিক মতো করার কথাও বলা হয়েছে।
নানা গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় ইতিমধ্যে জেলার চারটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে শো-কজ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চিঠির যথাযথ উত্তর না পেলে লাইসেন্স বাতিল পর্যন্ত করা হতে পারে বলে জানান মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
এ দিন বৈঠকের পরে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সংগঠন মুর্শিদাবাদ প্রোগ্রেসিভ সোশ্যাল হেল্থ কেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান শুধু জানান, সদর্থক আলোচনা হয়েছে।