—ফাইল চিত্র
প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ি নদীর জল নেমে এসে ভাসিয়ে দেয় বিস্তীর্ণ এলাকা। ধস নেমে ভেঙে যায় মুর্শিদাবাদের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান সড়ক। সমস্যায় পড়েন ফরাক্কা বিধানসভার বেওয়া–২ গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। অবশেষে প্রত্যেক বছরের নিয়মিত হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন দুই রাজ্যের কয়েক হাজার বাসিন্দা। ফরাক্কার বিধায়ক ও এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের যৌথ সিদ্ধান্তে নির্মিত হবে সেতু ও সড়ক। নির্মাণ ও সংস্কারের ব্যয়ভার বহন করবেন এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ। তার বিনিময়ে কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন প্রায় ৩০০ একর জমি জবরদখলকারীদের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। শর্তে উভয় পক্ষ সম্মত হলেও, পাল্টা শর্ত চাপিয়েছেন বিধায়ক। তাঁর দাবি, ওই জমি কোনও ভাবে ছাই ফেলার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ফরাক্কাতে ফিডার ক্যানেলের পশ্চিমপাড়ে বেওয়া থেকে শমসেরগঞ্জের পুটিমারি রোড পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে ফরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্পের অফ্ল্যাক্স বাঁধ রোড। এই এলাকাতেই নিশিন্দ্রা গ্রামের পাশে রয়েছে ফরাক্কা এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের একটি বড় ছাই পুকুর। এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, নিশিন্দ্রা এলাকায় জল নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করে একটি সেতু নির্মাণ করতে হবে। যাতে সারা বছর ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু থাকে। সেতু তৈরির জন্য প্রাথমিক ভাবে যে বাজেট ধরা হয়েছিল, তা এখন বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় জল নিকাশি ব্যবস্থা এবং সেতু তৈরির জন্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা প্রয়োজন। ফরাক্কা এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই সেই টাকা দিতে রাজি হয়েছে। তবে এর পরিবর্তে এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের যে ৩০০ একর জায়গা ফরাক্কায় জবরদখল হয়ে রয়েছে, তা তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ সেখানে সীমানা প্রাচীর তৈরি করবে। তবে, উদ্ধার হওয় জমিতে এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ নতুন কোনও অ্যাশ পন্ড তৈরি করবে না, এমনটাই জানিয়েছে।
ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক হয়েছে এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের হাতে দখল হওয়া ৩০০ একর জমি তুলে দেওয়া হবে। তবে সেখানে ছাই ফেলা যাবে না। এর পাশাপাশি নিশিন্দ্রা এলাকায় জল নিকাশির জন্য একটি চ্যানেল তৈরি করা হবে। সেখানে স্লুইস গেটও থাকবে। যাতে কৃষকেরা নিজেদের প্রয়োজন মতো চাষের জন্য জল পেতে পারেন।’’