Nabadwip

ডিসেম্বরেও পর্যটনে মন্দা, নেই ছুটির বেড়ানোর ভিড়

২০২০-র ডিসেম্বরের প্রথম শনিবার কিন্তু সোয়েটার মাফলার জ্যাকেট টুপির রঙিন ভিড় তেমন ভাবে নজরে এল না মায়াপুর-নবদ্বীপে। যদিও ট্রেন চলাচলের পর থেকে মানুষ ফের নড়াচড়া করছেন। একেবারে সুনসান খেয়াঘাট, মন্দিরের অতিথিশালায় টুকটাক ভিড়। 

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৪১
Share:

মায়াপুর ইস্কন। ফাইল চিত্র।

তখন বসন্ত। করোনার সঙ্গে রাজ্যের মানুষের প্রথম পরিচয় হয়েছিল। তারপর একে একে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত পেরিয়ে শীত। এই দীর্ঘ সময়ে সঙ্গ ছাড়েনি করোনা। বরং তা অতিমারির আকার ধারণ করে রাজ্যবাসীকে ঘরবন্দি করে ফেলেছিল একটা সময়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঘিরে ভয় কেটেছে মানুষের। থমকে থাকা জীবন রেলের চাকা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। যদিও নিয়ন্ত্রিত তবু ফের পথে নামছে মানুষ।

Advertisement

অন্য বার বছরের এই শেষভাগে মায়াপুর-নবদ্বীপ ভরে যায় দেশ বিদেশের পর্যটকে। মায়াপুর ইস্কন কিংবা নবদ্বীপের বিভিন্ন মঠে-মন্দিরে গোটা শীতকাল জুড়ে হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে আসেন। বিশেষ করে শনি-রবিবার। দু এক দিনের বেড়ানোর জন্য মায়াপুর নবদ্বীপ খুব পছন্দ পর্যটকদের। ভ্রমণ এবং পুন্যি দুই হয়।

কিন্তু ২০২০-র ডিসেম্বরের প্রথম শনিবার কিন্তু সোয়েটার মাফলার জ্যাকেট টুপির রঙিন ভিড় তেমন ভাবে নজরে এল না। যদিও ট্রেন চলাচলের পর থেকে মানুষ ফের নড়াচড়া করছেন। একেবারে সুনসান খেয়াঘাট, মন্দিরের অতিথিশালায় টুকটাক ভিড়।

Advertisement

বছর শেষের উপচে পড়া ভিড় গতবারেও স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্যের বিরাট সহায়ক হয়েছিল। কিন্তু এবার সবই আলাদা। “করোনা আতঙ্কে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে পর্যটন ব্যবসার। ভিড় যে হবে তার কোনও লক্ষণ কিন্ত এখনও বুঝতে পারছি না। যাঁরা এখন আসছেন তাঁদের ওপর নির্ভর করে আমাদের হোটেল চলে না। যাঁরা স্বল্প ব্যয়ে বেড়াতে আসেন প্রচুর সংখ্যায় সেই সব কম রোজগেরে মানুষেরা এবার আদৌ বেড়ানোর মতো অবস্থায় আছেন কি না, সেটাই আসল কথা। তাঁরা না এলে আমাদের কোনও লাভ নেই।’’—বেসামাল শীতের পর্যটন প্রসঙ্গে বলছিলেন মায়াপুর হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দেবনাথ।

তবে আশার কথাও তিনি শুনিয়েছেন। “এতদিন একদম লোকজন আসছিল না। এখন কিছু মানুষ আসা শুরু করছেন। তাতে প্রতিষ্ঠান চালানোর খরচটা উঠে আসছে।”

মায়াপুর ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস বলেন, “অন্য বারের তুলনায় ভিড়। কিন্ত আনলক পর্বে ইস্কন খোলার পর যে শূন্যতা ছিল, তার অনেকটাই ভরে উঠছে একটু একটু করে।’’

যেমন রাসের সময় গড়ে পনেরো হাজার মানুষ যাতায়াত করেছেন মায়াপুরে। প্রথম দিকের তুলনায় অতিথিশালার বুকিং অনেক বেড়েছে। যদিও তার সত্তর শতাংশ হচ্ছে অনলাইনে। বাসে করেও মানুষের আসা শুরু হয়েছে, জানিয়েছেন তিনি।

এসময় পর্যটকদের জন্য নিজস্ব কিছু উৎসব পালন করা হয় ইস্কনে। রাস থেকে শুরু হয় শনি-রবিবার বিকেলে সুসজ্জিত হাতির পিঠে রাধাকৃষ্ণকে চড়িয়ে মন্দির চত্বরের শোভাযাত্রা। তা দেখতে ভিড় করতেন বহিরাগতরা। এবার তাঁরা সংখ্যায় কম।

পর্যটন নির্ভর নবদ্বীপের ব্যবসার কথা বলতে গিয়ে নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “গত কয়েকমাসে নবদ্বীপের ব্যবসার হাল করুণ। দুর্গা পুজো বা রাসে মানুষ আশা করেছিল। কিন্তু তা ফলবতী হয়নি। বড়দিনে বড় কিছু হবে বলে আমাদের মনে হয় না।” সামনে বড়দিন এবং নিউ ইয়ার। পুরনো ছবি ফিরবে কিনা, বলবে সময়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement