প্রতীকী ছবি
ঘূর্ণিঝড় আমপানের ক্ষত সারতে না সারতেই রবিবার সন্ধ্যার হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। সাগরদিঘি এলাকায় প্রায় ৫৫টি ইলেকট্রিকের পোল পড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন হয়ে পড়ে বলে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের আঞ্চলিক দফতর সূত্রে জানা যায়। তার প্রভাব পরে টেলি যোগাযোগ মাধ্যমেও। রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল পরিষেবা ব্যাহত হয়। বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট পরিষেবাও।
এর আগে ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’ এর দাপটে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎবাহী তারের খুঁটি পড়ে প্রায় দু’কোটি টাকার কাছাকাছি ক্ষতি হয়েছে বলে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের আঞ্চলিক দফতর সূত্রে জানা যায়। এখনও সেই সব জায়গায় মেরামত শেষ হয়নি জানিয়ে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের আঞ্চলিক প্রধান প্রশান্ত হাজরা বলেন, “সাগরদিঘি ও লালবাগ, ভগবানগোলায় রবিবারের ঝড়ে বেশ কিছু ইলেকট্রিক পোল পড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি খারাপ হয়েছিল। রবিবার রাত থেকে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে তা অনেকটা উদ্ধার করা হয়েছে।” তার প্রভাব পড়েছে মোবাইল পরিষেবায়।
বহরমপুর ব্লক, নবগ্রাম, লালবাগ লালগোলা, জঙ্গিপুর, সুতি, ধুলিয়ান প্রভৃতি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যাহত হয়। এর প্রভাব পড়ে সরকারি দফতর থেকে চিকিৎসা পরিষেবাতেও। দূর্বল নেটওয়ার্কের জন্য চিকিৎসকরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ঠিকমত করতে পারেননি অনেক ক্ষণ ধরে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রচণ্ড পরিমাণে কলড্রপ হয়েছে। হাসপাতালের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে একটা ফোনে কয়েক মিনিটের মধ্যে যে যোগাযোগ হয়, নেটওয়ার্কের অসুবিধার কারণে বেশ কিছু ক্ষণ অন্তর অন্তর সেই যোগাযোগ করা গিয়েছে। কখনও আবার যোগাযোগ করা যায়ওনি।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি মুশারফ হোসেন বলেন, “সারা দিন নেটের অবস্থা ভাল না থাকায় তার ফলে জরুরি কথাবার্তা চালাতে অসুবিধা হয়েছে।”
এক বেসরকারি সংস্থার টেলিকম ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ্ত দাস বলেন, “বিদ্যুৎ চলে গেলে নেটওয়ার্কের টাওয়ার যেখানে আছে, সেখানে যদি জেনারেটর না চলে তা হলে মোবাইল নেটওয়ার্ক বসে যাবে। ইন্টারনেটও বন্ধ হয়ে যাবে। আবার কোনও টাওয়ারে জেনারেটর আছে কোথাও নেই, সেখানে তখন বাকি টাওয়ারগুলোর ওপর চাপ বাড়ে। ফলে কল ব্লক বা কল ড্রপের সঙ্গে ইন্টারনেটের স্পিডও কমে যায়। তবে ঝড়ে মাইক্রওয়েভ লিঙ্কের বিচ্যুতি হলে বা ওভারহেড ফাইবার ছিঁড়ে গেলেও এই অসুবিধা হয়।”
মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “বিএসএনএল ও ভোডাফোন নেটওয়ার্কে সকাল থেকে খুবই সমস্যা ছিল বিশেষ করে লালগোলা, ভগবানগোলা এলাকায়। তবে বিদ্যুৎ দফতর ও টেলি যোগাযোগ সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে সকালের মধ্যে ওই সমস্থ এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আবার পুর্নগঠন করা সম্ভব হয়েছে।” জঙ্গিপুর জেলা পুলিশ সুপার কে রঘুবংশী বলেন, “সাগরদিঘীর বিস্তীর্ণ এলাকা রবিবারের ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিন্ন হলেও সকালের মধ্যে তা ঠিক করা হয়েছে।’’