আহত মন্ত্রী জাকির হোসেন। ফাইল চিত্র।
সাত দিন পেরিয়ে গেলেও নিমতিতা রেল স্টেশনে বিস্ফোরণ কাণ্ডের কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর বিস্ফোরক হামলায় এখনও সূত্র হাতড়ে চলেছে তদন্তে নিযুক্ত সিট। সিটের প্রধান এডিজি (সিআইডি) অনুজ শর্মাও ঘুরে গেছেন ঘটনাস্থল। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কিছু না বললেও তদন্ত নিয়ে তিনি যে সন্তুষ্ট জানিয়ে গেছেন তা। একাধিক তদন্তকারী সংস্থা দফায় দফায় নিমতিতার ঘটনাস্থল ঘুরে গেলেও তদন্তে সেভাবে কোনও অগ্রগতি হয়েছে বলে ভরসা দিতে পারেনি স্থানীয় পুলিশ। ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছে বিড়ি শিল্পাঞ্চল।
এলাকায় বড় বড় বিড়ি কারখানার মালিক রয়েছেন ৪৮ জন। বিড়ি মালিক সমিতির সম্পাদক রাজকুমার জৈন বলছেন, "জাকিরের উপর এই বোমা হামলার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। এখনও আমারা নিশ্চিত নই এই হামলার উদ্দেশ্য কী? রাজনীতি নাকি ব্যবসায়িক শত্রুতা। নাকি সীমান্ত সন্ত্রাস। যে কারণেই এই হামলা হোক ৭ দিন পরেও পুলিশ তা বের করতে পারেনি। ফলে বিড়ি ব্যবসায়ীর সকলেই খুব আতঙ্কে রয়েছে।’’
পুরো বিড়ি শিল্পাঞ্চল যেন থমকে রয়েছে এই ঘটনায়। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে রাত বিরেতে ব্যবসায়ীরা বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। ট্রেনে যাতায়াত বন্ধই প্রায়। ফলে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও এর বড় প্রভাব পড়ছে।"
কংগ্রেস অবশ্য এদিনও দাবি করেছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই রয়েছে এই হামলার পিছনে।
ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাস বলছেন, ‘‘সাত দিন পরেও পুলিশ তদন্তে কিছুই পায়নি। আসলে শাসক দলের নিজেদের দ্বন্দ্ব ও প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ থেকেই এই ঘটনা। সেটা তো আর প্রকাশ্যে কবুল করতে পারছে না পুলিশ। তাই পুলিশের মুখে কুলুপ আঁটা। মুখ্যমন্ত্রীর ‘রিমোট কন্ট্রোলে বিস্ফোরণ’ প্রমাণ করতে গিয়ে নাকালে পড়েছে পুলিশ।’’
তাঁর দাবি, সিবিআইকে এই ঘটনার তদন্ত ভার দেওয়া উচিত।
স্থানীয় একটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলি বলেন, ‘‘রাজনীতি যাই করুন, জাকিরের উপর হামলায় ক্ষোভ রয়েছে গোটা অরঙ্গাবাদেই মানুষের মনে। সে দিনের হামলায় যে পুলিশি গাফিলতি ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেন তাঁর সঙ্গে সেদিন পুলিশ ছিল না, তার নিরাপত্তা রক্ষীরা পিছিয়ে পড়েছিল কেন, কেনই বা ওই মুহূর্তে আলো ছিল না নিমতিতা রেল স্টেশনে এ-ই সব প্রশ্নগুলির উত্তর কোথায়? কাদের গাফিলতি ছিল এই ঘটনায় সেটাও পুলিশের খতিয়ে দেখা উচিত।"
জঙ্গিপুরের সাংসদ ও তৃণমূলের জেলা স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক খলিলুর রহমান অবশ্য বলছেন, ‘‘পুলিশি তদন্তের দিকে চেয়ে আছি আমরা সকলেই।"
খলিলুর বলেন, ‘‘এই হামলার প্রেক্ষিতে জাকির এবং আমাকে জেড নিরাপত্তা দিয়েছে রাজ্য সরকার।"
তবে হামলায় আহত মন্ত্রী জাকির হোসেন আপতত অনেকটাই সুস্থ। কথাবার্তাও বলছেন স্বাভাবিক ভাবেই। ভাত সহ অন্যান্য খাবার খাচ্ছেন। তবে চলাফেরায় কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে।