প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের শুরু থেকে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে সিজ়ার বন্ধ। তাতে সমস্যায় পড়ছেন এলাকার প্রসূতি ও পরিবারের লোকেরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, একমাত্র অ্যানাস্থেটিস্ট না থাকায় সিজ়ার ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই সন্তানসম্ভবাদের দূরের কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এগারো বছর আগে এই হাসপাতালে প্রথম সিজ়ার ব্যবস্থা চালু হয়। নানা সমস্যার জন্য কিছু দিন পরেই তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রায় দুই বছর আগে আবার নতুন করে সপ্তাহে এক দিন ও পরে দু'দিন সিজ়ার প্রসব করা হত। আশেপাশের এলাকার লাখ পাঁচেক মানুষ চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। প্রতি সপ্তাহে প্রায় কুড়ি জনের বেশি প্রসূতি প্রসবের জন্য এই হাসপাতালে আসেন। তার মধ্যে প্রায় পঁচাত্তর শতাংশ প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব হলেও সিজ়ার বন্ধ থাকায় বাকিদের অন্যত্র রেফার করতে হয়। কারণ, প্রসূতির কোনও রকম শারীরিক সমস্যা থাকলে ঝুঁকি নেওয়া যায় না। ফলে তাঁদের কেউ চল্লিশ কিলোমিটার দূরে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে, কেউ পঁচাশি কিমি দূরের কৃষ্ণনগর বা সত্তর কিমি দুরের বহরমপুরের কোনও সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন।
এক জন চিকিৎসক জানান, এলাকার মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নতুন করে এই হাসপাতালে সিজ়ার চালু করা হয়েছিল। সাধারণ প্রসবের পাশাপাশি এক জন অ্যানাস্থেটিস্ট ও দু'জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সপ্তাহের তিন দিন সিজ়ার করতেন। কিন্তু গত মার্চ মাসে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে একমাত্র অ্যানাস্থেটিস্ট রাতুল দাসকে করিমপুরের পাশাপাশি কলকাতার বরাহনগর হাসপাতালে ডিউটি দেওয়া হয়। লকডাউনের শুরু থেকে তাঁর অনুপস্থিতিতে সিজ়ার বন্ধ হয়ে রয়েছে। যদিও চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, তেহট্ট হাসপাতাল বা কাছাকাছি কোনও হাসপাতাল থেকে সপ্তাহের একটি দিন এক জন অ্যানাস্থেটিস্টকে এখানে পাঠালে সিজ়ার করা সম্ভব হবে। তা হলে এলাকার মানুষেরা বিশেষ করে বহু গরিব মানুষ সুবিধা পাবেন।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, এখানে সিজ়ার চালু হওয়ার পর থেকে কয়েক বার চালু হয়েও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফের চালু হলেও আবার বন্ধ হওয়ায় অনেক মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। হাসপাতালে এখন নতুন ভবন তৈরি হয়েছে কিন্তু সিজ়ার বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা উচিত।
হাসপাতালের সুপার মনীষা মণ্ডল জানান, "মার্চ মাসের আগে থেকে হাসপাতালের একমাত্র অ্যানাস্থেটিস্ট এখানে ছিলেন। তিনি অনুপস্থিত হওয়ায় সিজ়ার চালু করা যায়নি। বহু মানুষের কষ্ট হচ্ছে। খুব দ্রুত যাতে এখানে আবার সিজ়ার ব্যবস্থা চালু করা যায় তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ও স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে।"