রেল বাজেট

মুঠো এ বারেও শূন্য জেলার

নব্য একটি প্রকল্পের অনুমোদন, কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ বদল কিংবা ট্রেনের রেক-এর সংখ্যা বাড়ানো— দাবি ছিল বেশ কয়েকটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৪
Share:

নব্য একটি প্রকল্পের অনুমোদন, কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ বদল কিংবা ট্রেনের রেক-এর সংখ্যা বাড়ানো— দাবি ছিল বেশ কয়েকটি।

Advertisement

বুধবার রেল বাজেটের দিতে তাই তাকিয়ে ছিল মুর্শিদাবাদ জেলা। লাগোয়া নদিয়া এবং বীরভূম জেলারও প্রত্যাশা ছিল অনেক। তবে এ দিন বেলা গড়ালেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, সে সব প্রকল্প বা দাবির তোয়াক্কাই করেনি রেল মন্ত্রক।

চৌরিগাছা-সাঁইথিয়া ভায়া কান্দি কিংবা কৃষ্ণনগর-বহরমপুর ভায়া করিমপুর, ডোমকল, প্রস্তাবিত এই রেলপথ দু’টির কোনও উল্লেখই এ দিন রেল বাজেটে ছিল না। ছিল না, লালগোলা-শিয়লদহ শাখায় কয়েকটি মেমু ট্রেনের রেকের সংখ্যা আট থেকে বাড়িয়ে বারো করার কোনও ইঙ্গিত।

Advertisement

কান্দি ছুঁয়ে চৌরিগাছা থেকে বীরভূমের সাঁইথিয়া পর্যন্ত রেলপথের দাবি স্বাধীনতার পর থেকেই। তার জন্য সংগঠিত আন্দোলন চলছে গত ২৭ বছর ধরে। ‘কান্দি রেলওয়ে সংযুক্তকরণ কমিটি’র নেতৃত্বে গড়ে ওঠা অনেকগুলি আন্দোলনের মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য চার বার কান্দি থেকে দিল্লি পর্যন্ত সাইকেল মিছিল করে যন্তরমন্তরে অবস্থান ও অনশন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘটনাও বিরসল নয়। ফলও মিলেছিল তাতে। ‘কান্দি রেলওয়ে সংযুক্তকরণ কমিটি’র সম্পাদক প্রভাত কর বলেন, ‘‘২০০৯ সালের ২৩ জুলাই রেল বাজেটে ওই প্রকল্পটি অনুমোদন করেন রেলমন্ত্রী। তারপর ২০১১ সালে প্রথম পর্বের সমীক্ষার কাজ শেষ হয়।’’ ২০১৬ সালে প্রস্তাবিত ওই রেলপথের সীমনা নির্ধারণের জন্য পিলার পোঁতার কাজও শুরু হয়েছিল। চৌরিগাছা থেকে ভরতপুরের রাজারামপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার জুড়ে খুঁটি পোঁতাহয়ে গিয়েছে গত এক বছরে। তারপর পেশ হল এই রেল বাজেট। ইসলামপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, তথা মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অব কমার্সের সহ-সম্পাদক শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘গনিখান চৌধুরীর আমল থেকে দাবি উঠেছে, করিমপুর, ডোমকল ছুঁয়ে, কৃষ্ণনগর থেকে বহরমপুর পর্যন্ত রেলপথের। ওই তল্লাটের সাতটি থানা এলাকায় এক ইঞ্চিও রেলপথ নেই। ফলে বাগড়ির ওই এলাকা আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে।’’ রেল বাজেটের দিন তল্লাটের লোক তাই টিভির পর্দায় চোখ রাখে। তবে, এ বারও তার কোনও আশার আলো দেখতে পাননি তাঁরা। কাকভোরে লালগোলা ছেড়ে সকাল সাতটা নাগাদ একটি মেমু ট্রেন পৌঁছয় রানাঘাটে। ওই ট্রেনের য়াত্রীদের অনেকেই জানান, কলকাতায় রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই ট্রেনটি ব্যবহার করেন তাঁরা। কিন্তু, রুগি নিয়ে রেলের ওভারব্রিজ টপকে অন্য প্ল্যাটফর্মে গিয়ে ফের শিয়ালদহগামী ট্রেন ধরা বেশ কঠিন ব্যাপার। অনেকেই সেটা পারেন না। ফলে কলকাতায় চিকিৎসা করানো অনেকের পক্ষে প্রায় অসম্ভব
হয়ে পড়ছে।

মুর্শিদাবাদ জেলা রেলযাত্রী সমিতির সম্পাদক এ আর খান বলেন, ‘‘ভোরের মেমুটা তাই সোজা শিয়লদহ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি আমাদের দীর্ঘ দিনের। চিকিৎসার প্রয়োজনে সেই মেমু যেন সকাল ৮টায় শিয়ালদহ পৌঁছয়। কে শোনে কার কথা!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement