প্রতীকী চিত্র
দলীয় কর্মসূচিতে তিনি অনেক দিন ধরেই অনুপস্থিত, দলের সভা-সমিতি-মিছিলে তেমন দেখা মেলে না তাঁর। দলের শহর সভাপতির সঙ্গে তাঁর ‘মধুর’ সম্পর্কের কথাও সামনে এসে পড়েছে সাধারনের। এই অবস্থায়, তৃণমূলের ভোট-কুশলী পিকে’র টিমের সঙ্গে বৈঠকেও ডাক পেলেন না তিনি। বহরমপুর পুরসভার ১৮ বছরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য অবশ্য বলছেন, ‘‘অসুস্থতার কারণে দলের দু-একটি সভায় থাকতে পারিনি। তবে পিকে’র দল জেলায় যে আসছে তা আগে থেকে কেউ আমায় জানাননি। ওই দলের দুই সদস্য এক জন সাধারন নাগরিক হিসাবে আমার সঙ্গে দেখা করেছন। ওঁরা যা যা জানতে চেয়েছেন, আমি তাঁদের সেই তথ্য দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি।”
আসন্ন পুরভোটে নির্ঘণ্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে, পুরভোট নিয়ে শাসক থেকে বিরোধী— সব রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
আর তারই মধ্যে বহরমপুর শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে কৌতুহলী প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে— নীলরতন আঢ্য কোথায়?
পুরসভার প্রাক্তন প্রধানকে লোকসভা ভোটের পর থেকে দলের কোনও সভায় দেখা যায়নি, পুরভোটের আগে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করতেও দেখা যাচ্ছে না তাঁকে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
সাম্প্রতিক অতীতে দলীয় কার্যালয় থেকে মাঠে ঘাটের কোন সভা সমিতিতে তাকে দেখা যায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরভোটের রণকৌশল কেমন হবে তার রূপরেখা সাজাতে প্রশান্ত কিশোরের টিমের সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে দলের ছোট বড় নেতাদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে শহরের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান।
এরই মধ্য, দলের শহর সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বাগবিতণ্ডা দল তো বটেই শহরের মানুষের কাছেও অজানা নয়। সেই সূত্রেই কি তাঁর অভিমান?
নীলরতনবাবুর দাবি, “প্রত্যেকের একটা আত্মসম্মান আছে। শহরের উন্নয়নকে লক্ষ করে আমরা এই দলে এসেছিলাম। কিন্তু বোর্ড শেষ হওয়ার পর নেতৃত্ব আমাদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করেনি। আমরা অসম্মানিত হয়েছি। দলের শহর সভাপতি ইদানিং যে ভাবে আমাকে আক্রমণ করেছেন তার কোনও সমাধান জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে পাইনি। এর পরেও বলবেন, কোনও অভিমান হবে না!’’
২০১৭ সালের মাঝামাঝি কংগ্রেস ত্যাগ করে তৃণমুলে এসেছিলেন নীলরতন। তাঁর হাত ধরেই বহরমপুর পুরসভা কংগ্রেসের হাত থেকে তৃণমূলে উল্টে য়াওয়া। তা হলে কি আবার দল ছাড়ছেন নীলরতন আঢ্য?
সে বিষয়ে কোন পরিস্কার কথা না বললেও তিনি পুরভোটে যে লড়বেন সে কথা এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন। নীলরতন বলেন, ‘‘কি করব, সেটা সময়ই বলবে, তবে, লড়াই থেকে সরছি না।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান অবশ্য বলছেন, “নীলরতনবাবু অসুস্থ থাকায় দলীয় বৈঠকে আসতে পারেননি। পুরসভা নিয়ে কোন বৈঠক এখনও হয়নি। বৈঠক হলেই ওঁকে ডাকা হবে।”