বিদায়ি পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য ও প্রশাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তিনিই বহরমপুরের ‘পুরপ্রধান’। অন্তত পুরকর্মীদের কাছে। বিদায়ি পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্যও পুরকর্মীদের ওই আবদার মেনে নিয়েছেন। বলছেন, ‘‘সরকার মনোনীত প্রসাসকের উপরে আমাদের আস্থা রয়েছে।’’
নির্বাচিত পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে নীলরতন পুরসভার যাবতীয় দায়িত্ব বহরমপুর মহকুমাশাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেন। ফলে এ দিন দুপুর থেকে বহরমপুর পুরসভায় প্রশাসকরাজের শুরু। তারপরই পুরভবন প্রাঙ্গণে তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত ‘মুর্শিদাবাদ জেলা পৌর কর্মচারী ফেডারেশন’ নীলরতন ও অন্য কাউন্সিলদের সম্বর্ধনা দেয়। অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে ‘ফেডারেশন’- এর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি নাডুগোপাল মুখোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ‘‘সরকারি ভাবে নীলুদা আর পুরপ্রধান না থাকলেও, তিনি আমাদের কাছে পুরপ্রধানই আছেন।’’ তুমুল হাততালি দিয়ে পুরকর্মীরা সেই বক্তব্যে সহমত জানান।
নীলরতন আঢ্যও বলেন, ‘‘বাপ-ঠাকুরদারে আমল থেকে বহরমপুর পুরসভার সঙ্গে আমাদের পারিবরিক সম্পর্ক। পুরসভা ছাড়া চলতে পারব না। পুরসভা আমার প্রাণভোমরা। তাই ছুটির দিন বাদে অন্য দিনগুলোয় নিয়মিত পুরসভায় আসব। পুরকর্মী ও সাধারণ মানষের অসুবিধা হলে তার সমাধান করার চেষ্টা করব।’’ আবারও তুমুল হাততালি।
প্রশাসক নিয়োগের চর্চা শুরু হয়েছিল বেশ কিছু দিন ধরে। তখন থেকেই তাঁদের কাজ থাকা, না-থাকা নিয়ে অস্থায়ী কর্মীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। এ দিনের অনুষ্ঠান থেকে নাডুগোপাল ও নীলরতন দু’জনেই জানিয়ে দেন, তাঁরা ওই বিষয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। অস্থাযী কর্মীদের কাজ যাবে না বলে দুই মন্ত্রীই তাঁদের জানিয়েছেন বলে দাবি করেন নীলরতন।
বহরমপুর পুরসভার ২৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে তৃণমূলের প্রদীপ নন্দী বছর খানেক আগে মারা গিয়েছেন। বাকি ২৭ জনের মধ্যে ১৮ জন তৃণমূলের। তাঁদের মধ্যে কানাই রায় এখন জেল হেফাজতে। এ দিনের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে ছিলেন তৃণমূলের ১৭ জন ও কংগ্রেসের এক জন কাউন্সিলর। কংগ্রেসের ৮ জন কাউন্সিলর আসেননি। পুরসভার কংগ্রেসের দলনেতা মইনুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘‘খোলা গাড়িতে আবর্জনা বহণ ও পথের উপর বালি পাথর রাখা বন্ধ কিন্তু হল না। বন্ধ হয়নি অবৈধ ফ্ল্যাট নির্মাণ, নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার ও জবরদখল করে দোকানঘর নির্মাণ। যানজট মুক্তও করা গেল না বহরমপুরকে।’’ বিদায়ি পুরপ্রধান বলেন, ‘‘না হওয়া কাজের তালিকার মধ্যে কিছু কাজ পুলিশের এক্তিয়ারে পড়ে। কিছু কাজের জন্য জনসাধারণের সচেতনতা দরকার।’’ আর, প্রাশাসক বলেন, ‘‘পুরসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত বিষয়ে বিশেষ কিছু জানি না। পুরকর্মী ও আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালু রাখা হবে।’’