—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে জঙ্গি সন্দেহে ধৃত এক যুবকের দু’ জায়গায় দু’টি ভোটার কার্ডের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। এ বার সামনে এল একই এপিক নম্বরে দু’জন করে ভোটারের নাম থাকার বিষয়টি। সম্প্রতি ‘রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চে’র পক্ষ থেকে কয়েকটি নজির-সহ লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজ্যের ১৪টি জেলায় কাজ করে ওই মঞ্চ। ২.৪৬ লক্ষ শ্রমিক তাদের সদস্য বলে দাবি করে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক আসিফ ফারুক বলেন, “কোনও ব্যক্তির যেমন দু’টি করে ভোটার কার্ড থাকা বেআইনি, তেমনই একই নম্বরের এপিক দু’জন ভোটারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হওয়াটাও আইনসিদ্ধ নয়। এর ফলে কোথাও কোথাও পরিযায়ী শ্রমিকেরা প্রশাসনের কাছে ভোটার কার্ড জমা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তাই কয়েক জন শ্রমিকের ভোটার এপিক নম্বর ও নাম পরিচয় জানিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের হস্তক্ষেপ চেয়েছি আমরা যাতে ভিন রাজ্যে গিয়ে সমস্যায় না পড়েন ওই শ্রমিকেরা।”
আসিফ জানান, একটি নম্বরের ভোটার কার্ড যাঁর, তাঁর বাড়ি গুজরাতের আমদাবাদে। একই নম্বরের অন্য একটি ভোটার কার্ড পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের। আবার অন্য একটি নম্বরের একটি ভোটার কার্ড যাঁর নামে তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের ১১ নম্বর সংসদীয় কেন্দ্রে। বিধানসভা এলাকা রানিনগর। ওই ব্যক্তির ভোটদানের কেন্দ্র আমিরাবাদের বর্ধনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। একই নম্বরের একটি কার্ডের অন্য জন মহিলা। তাঁর বাড়ি হরিয়ানার হিসার সংসদীয় কেন্দ্রে। আরেকটি নম্বরের ভোটার কার্ডের ভোটার ৮ নম্বর বালুরঘাট সংসদীয় কেন্দ্রের বাসিন্দা। ওই নম্বরের আরেকটি ভোটার কার্ডের মালিকের বাড়ি গুজরাতে। আমদাবাদ পশ্চিম সংসদীয় কেন্দ্রের ভোটার তিনি। অসংখ্য নজির রয়েছে তাঁদের কাছে, জানান আসিফ। শ্রমিক সংগঠনের প্রশ্ন, একই নম্বরের ভোটার কার্ড কী করে দুই ব্যক্তি ব্যবহার করছেন? যে কোনও মুহূর্তে ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে সেই শ্রমিক সাইবার অপরাধে জড়িয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে তারা। আসিফ বলেন, “এমনিতেই এ রাজ্য থেকে যে সব শ্রমিক ভিন রাজ্যে কাজে যাচ্ছেন, বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের মারধর করা হয়েছে কয়েকটি জায়গায়। তার উপর যদি এই ধরনের ভোটার কার্ড সেই শ্রমিকের কাছ থেকে উদ্ধার হয়, তবে অযথা সন্দেহের উদ্রেক হবে। তাই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক নির্বাচন কমিশন।”
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “একই নম্বরের এপিকে দু’জন ভোটার কী করে থাকতে পারেন? এটা অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। এর পিছনে কী কারসাজি আছে, তা তদন্ত করে বের করা উচিত নির্বাচন কমিশনের।”