বাংলাদেশে ধৃত নদিয়ার যুবক। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশের ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো এবং নারী পাচারের অভিযোগে ভারতের এক নাগরিককে গ্রেফতার করল বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)। ধৃতের নাম বিকাশ সরকার। ৪১ বছরের ওই ব্যক্তির বাড়ি নদিয়ার কল্যাণী থানা এলাকায়। বিজিবির দাবি, অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পাশাপাশি পাচারের আগে বাংলাদেশের তিন মহিলা নাগরিককে উদ্ধার করেছে তারা। যুবকের পরিবার দাবি করেছে, ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে।
বিজিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার রাতে মহেশপুর উপজেলার হুদাপাড়া গ্রাম থেকে পশ্চিমবঙ্গের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে তারা। বিজিবি-র মহেশপুর ৫৮ ব্যাটেলিয়নের তরফে একটি বিবৃততে বলা হয়, গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে তারা খবর পায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বাঘাডাংগা গ্রামের হুদাপাড়া এলাকা দিয়ে তিন মহিলাকে ভারতে পাচার করার ছক করা হয়েছে। ওই খবর পেয়ে অভিযান চালায় তারা। বিজিবি-র একটি দল নির্দিষ্ট এক জায়গায় ওত পেতে থাকে।
রবিবার গভীর রাত। হঠাৎ এক ব্যক্তি শিস দিয়ে সঙ্কেত দেন তিন মহিলাকে। কিন্তু ওই ব্যক্তি অনেকটা দূরত্ব ছিলেন বলে মহিলারা সেই সঙ্কেত শুনতে পাননি বলে জানিয়েছে বিজিবি। ঠিক ওই সময়ে অভিযুক্ত যুবক অবৈধ ভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েন। এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতির আঁচ পেয়ে তৎক্ষণাৎ ভারতের দিকে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বিজিবির তার পিছু নেয়। বিজিবি শূন্যে গুলি চালায়। গুলির শব্দে ভারতীয় যুবক তখন মাটিতে বসে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তকে আটক করা হয় এবং তিন মহিলাকে আটক করা হয়। পরে ওই যুবকের পরিচয় জানা যায় তাঁর কাছে থেকে পাওয়া আধার কার্ড থেকে। বিজিবি-র এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বিকাশ সরকার নামে অভিযুক্ত স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তিনি মানব পাচারকারী দলের সক্রিয় সদস্য এবং দীর্ঘ দিন ধরে ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত।’’
পাচারের হাত থেকে উদ্ধার করা তিন মহিলাকে যশোরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই ঘটনায় মঙ্গলবার ঝিনাইদহের মহেশপুর থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। কল্যাণীর বাসিন্দা ধৃতের দাদা সুব্রত সরকার দাবি করেন তাঁর ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আমাদের বেশ কয়েকজন আত্মীয় রয়েছেন। তাঁরা সমস্যার মধ্যে আছেন। তাঁদের সাহায্য করার চেষ্টা করছিল ভাই। বিজিবি পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসিয়েছে।’’ তাঁরা আইনের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে জানান সুব্রত।