প্রতীকী ছবি
বাইকে চড়ে অ্যাফ্লেক্স বাঁধের রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় বোঝার জো ছিল না কিছুই। কিন্তু পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের কৌশলেই শেষ পর্যন্ত নাগালে আসে জঙ্গিপুরে বাইক-চক্রের খোঁজ।
রবিবার ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে সীমান্তের গ্রামে আরও দু’টি চোরাই মোটর বাইক। এই নিয়ে জঙ্গিপুরের সীমান্তের গ্রামগুলিতে দু’দিনে উদ্ধার হওয়া চোরাই বাইকের সংখ্যা দাঁড়াল ১০টিতে। কিন্তু ধরা যায়নি চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকি ৫ জনের কাউকেই।
পুলিশের সন্দেহ, ধৃতদের হেফাজতে রয়েছে আরও কিছু চোরাই বাইক। তবে দীর্ঘ দিন ধরে চোরাই বাইক পাচারের কারবারে জড়িত থাকায় ইতিমধ্যেই সীমান্ত পেরিয়েছে যে সব বাইক, সেগুলির আর নাগাল পাওয়া সম্ভব নয় বলে ধারণা পুলিশের।
গত এক বছরে ফরাক্কায় একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে পুলিশ প্রায় শ’দুয়েক চোরাই বাইক উদ্ধার করেছে। শমসেরগঞ্জ থেকেও বহু চোরাই বাইক উদ্ধার হয় হাতিচিত্রা এলাকা থেকে। এ বার জঙ্গিপুরেও সামনে এল চোরাই বাইক চক্রের হদিশ।
এ দিন বাইক চুরির ঘটনাটি ধরা পড়ার কায়দাটাও ছিল বেশ অভিনব। চুরি যাওয়া বাইক দু’টি সীমান্ত পাড়ের অ্যাফ্লেক্স বাঁধের সড়ক পথ দিয়ে সীমান্তের পথে গিয়েছে বলে খবর পেয়েছিল পুলিশ। দেরি না করে রাতেই বাঁধের সড়ক পথে নাকা তল্লাশি শুরু করে কাজি হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশকর্মী। তখন তাঁদের নজরে আসে দু’জন বাইক চালক। দু’টি লাল বাইক নিয়ে তারা সীমান্তের দিকে যাচ্ছে। পুলিশের জানা ছিল, চুরি যাওয়া বাইক দু’টির রংও লাল। এই মিল দেখে নেহাতই সন্দেহের বশে দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। নিজেদের গাড়ি এই দাবিতে অনড় ছিল দু’জনেই। এরপরই পুলিশের প্রশ্ন ছিল বাইক দু’টি কোন কোম্পানির? আর তাতেই কেল্লা ফতে। পুলিশের জেরায় তারা গাড়ি দু’টি কোন কোম্পানির তা জানাতে পারেনি। নিজেদের বাইক, অথচ তারা নিজেরাই জানে না সেগুলি কোন কোম্পানির, তা দেখেই পুলিশের মনে সন্দেহ হয়। এক দিকে বাংলাদেশ। অন্য দিকে ঝাড়খণ্ড। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের যে কোনও এলাকায় যাতায়াত করা সহজ। পুলিশের সন্দেহ, তারই সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই বাইক এনে জঙ্গিপুর থেকে ফরাক্কার বিভিন্ন এলাকায় এনে জমা করা হয়। এই সব চোরাই কারবারে মোটরবাইকের গ্যারাজের কিছু মিস্ত্রি জড়িত বলেও সন্দেহ পুলিশের। তাদের সাহায্য নিয়ে চোরাইবাইক বিক্রি হত ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়। সস্তার বাইক বলে তার ক্রেতারও অভাব হত না।
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “জঙ্গিপুরে চোরাই বাইক বিক্রি হত না। চোরাই বাইক নম্বর প্লেট বদলে সীমান্ত পার করিয়ে বাংলাদেশ পাঠানো হচ্ছিল।”