ফাইল ছবি
ছোট থেকেই সে মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিল পরিজনের মধ্যে। মালদহের গৌড় মহাবিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সের তৃতীয় বর্ষে পড়ত সে। এমন কী ঘটল যে, সেই সুশান্ত চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল ছক কষে তার এক সময়ের পড়শি এবং বান্ধবী সুতপা চৌধুরীকে খুন করার? সোমবার সন্ধ্যার ঘটনার একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে (যে ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) সুতপাকে সামান্য নড়তে দেখে নিচু হয়ে বার বার ছুরি মারছে ওই যুবক। এই ছবি দেখে শিউরে উঠছেন মালদহে সুশান্তের পরিচিতেরা।
পুরাতন মালদহের মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের খনিবাথানি গ্রামে সুশান্তের পরিবার, পরিজনেরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি বদলে যাচ্ছিল সে। সুশান্তের ভাই সুরজিৎ চৌধুরী বলেন, “কয়েক মাস ধরে ও বদলে গিয়েছিল। কারও সঙ্গে ঠিক মতো কথাও বলত না। মায়ের দিকেও হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে গিয়েছে দাদা।” সুশান্তের বাবা নিখিল চৌধুরী, যিনি শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কাজ করেন, তিনিও বলেন, “পুলিশের চাকরির সুবাদে অনেক অপরাধী দেখেছি। ছেলের কাণ্ডটা কিছুতেই বুঝতে পারছি না। কেনই বা ও এমন কাণ্ড ঘটাল— উত্তর মিলছে না।”
এ দিন যখন সুশান্তকে বহরমপুরে ফার্স্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হয়, বাড়ির কেউ সেখানে হাজির ছিল না। সুশান্তের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য কোনও আইনজীবী মিলছিল না। শেষে আইনজীবী অলকেশ পাল তার জামিনের জন্য সওয়াল করেন। উল্টো দিকে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করে তাকে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে চায়। শেষে সুশান্তকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক নীলাদ্রি নাথ। আদালত থেকে বার হওয়ার সময়ে সুশান্ত জানিয়ে যায়, “ফেসবুক লাইভ করে যা বলার বলব।”
এই ফেসবুকেই কিছু দিন আগে নিজের পরিচয়পত্র বা ‘অ্যাবাউট’ বদলেছিল সুশান্ত। সেখানে এখন লেখা: ‘এই বেওয়াফা তোর উপর একদিন অনেক ভারী পড়বে। এমনকি তোর জান পর্যন্ত যেতে পারে ম্যাডামজি’। প্রশ্ন উঠেছে, এই বার্তার লক্ষ্য কি সুতপা ছিলেন?
সুশান্ত সম্পর্কে তাঁর আত্মীয় পরিজনেরা বলছেন, তার বাবার মতো পিসেমশাইও কাজ করতেন পুলিশে। ছোটবেলা থেকে দীর্ঘ সময় পিসির বাড়িতেই থাকত সুশান্ত। প্রথমে পুলিশ লাইনে, তার পরে ইংরেজবাজার শহরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের এয়ারভিউ কমপ্লেক্সে বাড়ি কেনেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে সেখানেই উঠে আসে সুশান্ত।