মুসাফির হোসেনের প্রেমিকা ফারহানা আখতার। —নিজস্ব চিত্র।
এ যেন হিন্দি সিনেমার গল্পকেও হার মানায়! প্রেমের টানে হাজার হাজার যোজন পথ পার করলেন আমেরিকার এক যুবতী। সুদূর সে মুলুক থেকে এসে উঠলেন মুর্শিদাবাদে প্রেমিকের বাড়িতে।
বলিউডি সিনেমা ‘লভ কে লিয়ে কুছ ভি করেগা’-র কাহিনি না হোক, অন্তত সে নামের সঙ্গে যেন বাস্তবেই এ গল্পের চিত্রনাট্য মিলে গিয়েছে। তবে তফাত হল, এ চিত্রনাট্য বা তার কুশীলবেরা সকলেই বাস্তবের চরিত্র।
এ কাহিনির সূত্রপাত হয়েছিল, সমাজমাধ্যমে আলাপপরিচয় ঘিরে। মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানার কাতলামারী এলাকার মুসাফির হোসেনের প্রেমে পড়েন আমেরিকানিবাসী ফারহানা আখতার। তবে আমেরিকায় বসবাস করলেও জন্মসূত্রে তিনি বাংলাদেশি। বেশ কয়েক বছর ধরে সপরিবার আমেরিকায় থাকেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, টিকটক ভিডিয়ো করে বেশ নাম কামিয়েছেন মুসাফির। বছর তিনেক আগে সামাজমাধ্যমেই ফারহানার সঙ্গে বন্ধুত্বের সূত্রপাত। প্রথম দেখাতেই মুসাফিরের প্রেমে নাকি হাবুডুবু খেতে শুরু করেন ফারহানা। তিন বছর চুটিয়ে প্রেমের পর শেষমেশ প্রিয় মানুষের কাছে ছুটে আসা তাঁর।
ফারহানার দাবি, গোড়ায় ভিন্দেশি মেয়ের সঙ্গে ছেলের সম্পর্ক মানতে চায়নি মুসাফিরের পরিবার। তবে তাঁর অদম্য জেদ আর ভালবাসার কাছে হার মেনেছেন প্রেমিকের পরিবারের সদস্যেরা। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির লোক যা-ই বলুক। মুসাফিরকে বিয়ে করে ভবিষ্যতে আমেরিকায় নিয়ে মেতে চাই।’’ প্রেমিকাকে কাছে পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আপ্লুত মুসাফির। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ওপর বিশ্বাস রেখে সূদূর আমেরিকা থেকে নিজের পরিবার ছেড়ে এসেছে ও। এ বিশ্বাসের মর্যাদা রাখব।’’
রানিনগর এলাকায় এ ঘটনা জানাজানি হতেই মুসাফিরের বিদেশি প্রেমিকাকে দেখতে কার্যত লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে। আপাতত মুসাফিরের বাড়ির ঘরেবাইরে সে ভিড় সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয়েরা। তবে এই ‘ঝামেলা’ সত্ত্বেও আহ্লাদে আটখানা মুসাফিরের বাবা আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেকে ফোনে ঘন ঘন কথা বলতে দেখে ভয় পেতাম। কোনও বাজে মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বে বলে মাঝেমধ্যেই ছেলেকে বকাবকি করতাম। তবে আমেরিকা থেকে বৌমা আসছে ভেবেই আনন্দে কূল পাচ্ছি না!’’