মশা-নিধন: নওদায়। ছবি: মফিদুল ইসলাম
শেষ বর্ষায় ডেঙ্গির প্রকোপ যে বাড়ে, এ নতুন কথা নয়। কিন্তু ডেঙ্গি প্রতিরোধে বছরভর ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও চলতি অগস্টেই মুর্শিদাবাদ জেলার কিছু এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ কপালে ভাঁজ ফেলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। সেই তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে নওদা।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারি থেকে অগস্টের ৪ তারিখ পর্যন্ত জেলায় ৮৯ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু ২২ অগস্ট সেই সংখ্য়া এসে দাঁড়িয়েছে ২১৪। এবং নওদা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গির আঁতুরঘর।
স্বাস্থ্য দফতরের এক প্রতিনিধিদল দিন কয়েক আগে নওদা ব্লক পরিদর্শন করে এ তথ্যই দিয়েছে বলে খবর। ওই ব্লকের বুন্দাইনগর গ্রামে বহু মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল কিংবা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি।
পরিস্থিতি এমনই যে স্থানীয় সাংসদ অধীর চৌধুরী সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তাঁর উদ্বেগ আড়াল করেননি। তাঁর দাবি, ‘‘ডেঙ্গির তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘জেলা জুড়ে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। নওদার ডেঙ্গির রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। প্রতি দিন স্বাস্থ্য দফতরের কোনও কোনও আধিকারীক সেখানে উপস্থিত থেকে প্রয়োজনীয় কাজ করছেন।’’ তাঁর দাবি, জেলায় ৭ মেট্রিক টন মশা-নাশক এসেছে। তার মধ্যে ৩ কুইন্টাল নওদা ব্লকে দেওয়া হয়েছে। পাশের ব্লক থেকে লোক তুলে নওদায় নিয়ে যাওয়াও হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ বার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে মুর্শিদাবাদের ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯১টিকে ডেঙ্গি প্রশ্নে ‘স্পর্ষকাতর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুর্শিদাবাদের ৮ টি পুরসভার ১৫৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪৩টি ওয়ার্ডকেও একই ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জ, সুতি ১ ও ২ ব্লক, ভগবানগোলা ১ ও ২ ব্লক, নবগ্রাম ও বেলডাঙা ১ ও ২ ব্লককে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ডোমকল ও ধুলিয়ান পুরসভায় গত বছর ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল। এ বারেও এই দু’টি পুরসভায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব বলছে, গত বছর ১১৬৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেও কারও মৃত্যু হয়নি। এ বছর জানুয়ারি থেকে ৪ অগস্ট পর্যন্ত ৮৯ জন ডেঙ্গিকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৪ জন। মাত্র ১৮ দিনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১২৫ জন। উদ্বেগ বেড়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে।