প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, অধিক সংখ্যক সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের বৃত্তি দিতে হবে। সেই মতো বিভিন্ন জেলার প্রশাসন প্রচারে নেমে পড়েছিল। সেই কাজ কেমন হচ্ছে, তা দেখতে জেলায় জেলায় ঘুরেছেন সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের সচিব পিবি সেলিম। আর প্রশাসনের এই চেষ্টার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। নদিয়া-মুর্শিদাবাদ তো বটেই, সারা রাজ্যেই গত বছরের তুলনায় বেশি সংখ্যক পড়ুয়া বৃত্তি চেয়ে আবেদন করেছেন।
রবিবার মুর্শিদাবাদে দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা বলেন, “গত বছর ১৯ লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়া বৃত্তি পেয়েছিল। এ বার আবেদন জমা পড়েছে ২৫ লক্ষ। ফলে গত বছরের তুলনায় এবারে ৬ লক্ষ বেশি সংখ্যালঘু পড়ুয়া বৃত্তি পেতে চলেছে।”
কী ভাবে সংখ্যাটা বাড়ল?
মন্ত্রী জানান, গত বছর লোকবল কম ছিল। এ বার সেই সমস্যা মেটানো হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজ, ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে শিবির করে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করা হয়েছে। যার ফলে আবেদনকারীর সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় ও পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের পড়াশোনার জন্য বৃত্তি দিয়ে থাকে। গত জুলাই মাস থেকে অনলাইনে বৃত্তির জন্য ফর্ম পূরণ চলছে। ৩১ অক্টোবর শেষ হবে ফর্ম পূরণ। এর পরে ফর্ম খতিয়ে দেখা হবে। তারপর মিলবে বৃত্তি। এই প্রক্রিয়া ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। বৃত্তি কারা এবং কী ভাবে পাবে?
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ শতাংশ নম্বর প্রাপ্ত কোনও সংখ্যালঘু পড়ুয়ার পরিবারের বাৎসরিক আয় বছরে এক লক্ষ টাকার নীচে হলে মিলবে এই বৃত্তি। প্রথম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা বছরে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃত্তি পায়। এ ছাড়াও একাদশ শ্রেণি থেকে শুরু করে গবেষণা স্তর পর্যন্ত পড়ুয়ারা বছরে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃত্তি পেয়ে থাকেন।
গত বছর মুর্শিদাবাদে ২ লক্ষ ৯০ হাজার পড়ুয়া বৃত্তি পেয়েছিল। এ বারে ওই পড়ুয়ারা তো বৃত্তি পাবেই, তার সঙ্গে আরও ২ লক্ষ ১০ হাজার নতুন আবেদনপত্র জমা পড়েছে। ফলে সব মিলিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় ৫ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলছেন, “লাগাতার প্রচার, নিখরচায় অনলাইনে ফর্ম পূরণের শিবির করা হয়েছে স্কুলে স্কুলে। যার ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দু’লক্ষ বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে।’’
নদিয়ায় গত বছর প্রায় ২ লক্ষ ৩ হাজার পড়ুয়া বৃত্তি পেয়েছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ ৪১ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্কর নস্কর বলছেন, “পড়ুয়াদের বৃত্তি পাওয়ার বিষয়ে আমরা সচেতন করায় এই সংখ্যা-বৃদ্ধি।’’ বহরমপুরের হিকমপুর হাই স্কুলের প্রধান সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, নদিয়ার নাকাশিপাড়ার মুড়াগাছা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমলেন্দু সিংহরায় জানান, নিবিড় প্রচারের কারণেই এই ফল মিলেছে।