প্রতীকী চিত্র
ধানঘড়ার ভাঙন নিয়ে এবার দুই বিধায়কের পরস্পরের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ নিয়ে রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে ধুলিয়ান ও ফরাক্কায়। সোমবার ধানঘড়ায় গঙ্গা ভাঙন দেখতে এসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক সরাসরি শমসেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছিলেন। পরদিন মঙ্গলবার আমিরুল তার উত্তরে তীব্র আক্রমণ করে মইনুল হককে কার্যত তোলাবাজির সর্দার বলে পাল্টা তোপ দাগলেন। শুধু তাই নয়, মইনুলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে বিধায়ক পদে ইস্তফা দেবেন বলেও জানিয়ে দেন আমিরুল।
তোলাবাজি প্রসঙ্গে শাসক ও বিরোধী দলের আক্রমণে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতি। এবং সোশ্যাল মিডিয়াও। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তোলাবাজির অভিযোগ কাকে অস্বস্তি ফেলবে তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে মইনুল ফরাক্কায় জিতেছেন ৫ বার। আমিরুল একবার, তাও নাম মাত্র ১৩০০ ভোটে। বিতর্কের শুরু অবশ্য ধানঘড়ায় ভাঙন দুর্গত এলাকায় চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে। ওই গ্রামে গঙ্গা ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শতাধিক পরিবার। গ্রামের কিছু মানুষ দুর্গতদের সাহায্যের জন্য চাঁদা চেয়ে প্রচার চালাচ্ছিলেন। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার বিধায়ক আমিরুল ৬২৭ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে ঘোষণা করেন এদের পুনর্বাসন দেবে রাজ্য সরকার। ঘর করতে দেওয়া হবে টাকাও।মইনুলের কথায়, ‘‘এই প্রতিশ্রুতি সবটাই ধাপ্পা। জমি কোথায় যে পুনর্বাসন দেবেন? আগে মানুষকে জমি দেখান। তা না করে পুরোপুরি বিভ্রান্ত করা হচ্ছে ভাঙন দুর্গতদের।’’ মইনুলের আরও অভিযোগ, ‘‘ভাঙনের গ্রামে মাইকে করে শমসেরগঞ্জের বিধায়কের নাম করে টাকা তুলছে কিছু লোকজন। এটা সরাসরি তোলাবাজি।’’
তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল বলেন, ‘‘যে সবচেয়ে বড় তোলাবাজ ফরাক্কায়, তার নাম মুখে আনতেও লজ্জা হয়। এনটিপিসির ছাই থেকে কিভাবে তোলাবাজি হয় সবাই জানে। তা ছাড়া ধানঘড়ায় আমার নাম করে কেউ টাকা তুলছে প্রমাণ দিন। আসল ঘটনা না জেনে কথা বলছেন তিনি। ধানঘড়ায় বহু বহিরাগত আসছেন ভাঙন এলাকা দেখতে। গ্রামের বিশিষ্টজনেরা তাদের কাছে দুর্গতদের জন্য সাহায্য চাইছেন। সেই টাকা তুলে গৃহহারাদের ১৫০০ টাকা করে, ঘর ছেড়ে গিয়েছেন যাঁরা তাদের এক হাজার টাকা করে সাহায্য দিয়েছেন সেই চাঁদার টাকা থেকে। এর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।’’আমিরুলের বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের ওই বিধায়কের ক্ষমতা থাকলে ধানঘড়ায় এসে সেখানে দাঁড়িয়ে এই অভিযোগ তুলুন। ধানঘড়ার মানুষই তার জবাব দিয়ে দেবে।’’
যাঁরা ধানঘড়ায় চাঁদা তুলছেন তাদের অন্যতম মহম্মদ সাফু শেখ বলেন, ‘‘দর্গতদের সাহায্যের জন্য টাকা তোলা হয়েছে। তাতে উপকৃত হয়েছে ৩৯৪ জন দুর্গত। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক দল নেই। সাধারণ মানুষই এই চাঁদা তোলায় উদ্যোগী হন।’’