উষ্মা: ক্রেতাসুরক্ষা মেলার উদ্বোধনে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী সাধন পান্ডে। নিজস্ব চিত্র
চেনা ভাষণের শেষ পর্বে মাউথ পিস হাতে নিয়ে মন্ত্রী প্রশ্ন রাখলেন—
‘‘ব্যাঙ্ক থেকে সময় মতো ঋণ পাচ্ছেন তো?’’
মঞ্চের সামনে থেকে উত্তরটা সমস্বরে উড়ে এল— ‘না’
সুর কাটল কিছু। স্পষ্টই হতবাক মন্ত্রী এ বার মঞ্চের পিছন দিকে ঘুরে খোঁজ করলেন,
—‘‘প্রোজেক্ট ডিরেক্টর কই, এ দিকে আসুন দেখি!’’
চেয়ার ঠেলে সামনে আসতেই প্রশ্নটা তাঁর সামনে রাখলেন মন্ত্রী,
—‘‘কী, ঋণ পেতে অসুবিধা হচ্ছে কেন, আপনি কি করছেন!’’
জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন বিভাগের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর দেবাহুতি ইন্দ্র মন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করতেই ফের উড়ে এল ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পান্ডের ধমক —আপনি তো কোনও উপভোক্তারই ঋণের ব্যবস্থা করতে পারছেন না, কাজটা করুন!’’
কাচুমাচু মুখে দেবাহুতি ফের এক বার চেষ্টা করতেই...
—চুপ, কিচ্ছু শুনতে চাই না কাজ করুন।’’
এ দিন বহরমপুরে সবলা এবং ক্রেতাসুরক্ষা মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা কেন ব্যাঙ্কের ভর্তুকি পাচ্ছেন না, তা নিয়েই কোপে পড়লেন গ্রামীণ উন্নয়ন বিভাগেরওই আধিকারিক।
মেলার উদ্বোধনী মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার সময় মন্ত্রী উপস্থিত দর্শকদের বলেন “ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা যেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ দেয়।” একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এককালীন দেড় লক্ষ টাকা ভর্তুকি পায়। ওই গোষ্ঠী ঋণ শোধ করার পরে আরও আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত সেই ভর্তুকি পাবেন। মেলায় উপস্থিত সদর মহকুমার বেশিরভাগ গোষ্ঠী সদস্য ব্যঙ্কের ওই ভর্তুকি পান না বলেই মন্ত্রীকে জানান। আর তখনই মন্ত্রী ওই আধিকারিকের কাছে জানতে চান , কেন ভর্তুকি পাচ্ছেন না স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা।
ওই আধিকারিক আমতা আমতা করতেই মন্ত্রী বলেন, “কোনও নেগেটিভ উত্তর শুনব না। আপনি আগে আপনার কাজ করুন।”তবে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সৌম্য ভট্টাচার্য পরে ঋণ সংক্রান্ত ব্যাখ্যায় বলেন “যাঁরা ব্যাঙ্কের ঋণ পান, তাঁদের মোট ঋণের ১১ শতাংশ সুদ দিতে হয়। সরকার ভর্তুকি বাবদ ওই ঋণের ৯ শতাংশ সুদ ঋণগ্রহীতাকে ফেরত দেয়। বাকি দুই শতাংশ সুদ দিতে হয় ঋণগ্রহীতাকে। রাজ্য সরকারের ভর্তুকি বাবদ টাকা ঢুকতে দেরি হয় সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ওঁরা ঠিক সময়ে পাশ-বই আপডেট করালেই দেখতে পাবেন।’’