প্রতীকী ছবি।
চার জোড়া ‘মেমু প্যাসেঞ্জার’ ট্রেনকে ১ মে থেকে ‘মেমু এক্সপ্রেস’ হিসেবে চালানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল পূর্ব রেল। হাওড়া, শিয়ালদহ, আসানসোল ও মালদহ ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারদের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবারই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে এ নিয়ে। বর্তমানে চলা স্টপ, সময়, গতি ও অন্যান্য সুবিধার অবশ্য কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। অথচ ন্যূনতম ভাড়া ৫ টাকা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৩০ টাকা। আর তাতেই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন একাধিক ট্রেন যাত্রী সংগঠন থেকে শাসক ও বিরোধী দলের সাংসদ ও নেতারাও। এমনকী বিজেপিও এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে।
যে চারটি মেমু পাসেঞ্জার ট্রেনকে আপ ও ডাউনে শুধুমাত্র নাম ও ট্রেনের নম্বর বদলে এক্সপ্রেস করা হচ্ছে সেগুলি হল শিয়ালদহ–জঙ্গিপুর, বর্ধমান–হাতিয়া, আসানসোল- গয়া ও আসানসোল-বারাণসী।
রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রেলওয়ে বোর্ডের সিদ্ধান্ত মতোই এই পরিবর্তন করা হয়েছে, যা ১ মে রবিবার থেকে কার্যকরী করা হবে। রেল মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান।
খলিলুর বলেন, “এই তুঘলকি সিদ্ধান্ত সাধারণ যাত্রীদের পকেট কাটার জন্যই করা হয়েছে। তার চেয়ে এই ভাবে তামাসা না করে সরাসরি ভাড়া বাড়ানোর কথা বললেই তো পারত রেল মন্ত্রক। সর্ব স্তরে এর প্রতিবাদ জানানো উচিত। রেল মন্ত্রককে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বলব। কোনওমতেই এই সিদ্ধান্ত মানা যায় না।”
সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য কমিটির সদস্য জামির মোল্লা বলেন, “রেল মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত জনবিরোধী বললেও কম বলা হয়। যাত্রীদের পকেট কাটার এটা একটা অভিনব কৌশল। সর্বস্তরে এর প্রতিবাদ হওয়া দরকার। তা না হলে ভবিষ্যতে এই কায়দাতেই অন্যান্য প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিকেও পরিবর্তন করা হবে।”
বিজেপির মুর্শিদাবাদ উত্তর জেলার প্রাক্তন সভাপতি ও মালদহর বিজেপির পর্যবেক্ষক সুজিত দাসও মানছেন রেল মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। তাঁর কথায়, “ওই ৪ জোড়া ট্রেনকে এক্সপ্রেস করতে গেলে স্টপ ও সময় কমাতে হবে। বাড়াতে হবে গতি। ভাড়া বাড়ছে অথচ যাত্রীদের সুবিধা বাড়ছে না। তা হলে মানুষ তো প্রতিবাদ করবেই। রেলের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা দরকার। আমি দলের পক্ষ থেকে যাত্রী সুবিধা সংক্রান্ত কমিটির কাছে চিঠি লিখে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য বলব।”
মুর্শিদাবাদ রেল যাত্রী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান সরকার বলেন, “এই সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনও সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেন না রেল মন্ত্রকের অফিসারেরা। বাড়তি ভাড়ার জন্য এত জালিয়াতি করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি আদালতে যাওয়া উচিত।” হাওড়া কাটোয়া সুবার্বন প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, “বৃহস্পতিবারই রেলের নোটিসটি বেরিয়েছে। চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক ও জন বিরোধী এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজ্যের সমস্ত যাত্রী সংগঠনগুলিকে প্রতিটি রেল স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজারের কাছে প্রতিবাদ জমা দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের জনপ্রতিনিধিদেরও তাদের মতো করে প্রতিবাদে সামিল হতে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় রেল মন্ত্রক।”