নিজস্ব চিত্র।
গাড়ি ভর্তি হয়ে চা-পাতা আসছে। আপাতদৃষ্টিতে এতে সন্দেহের কোনও জায়গা নেই। কিন্তু জাতীয় সড়কে ডিউটিতে থাকা পুলিশ কর্মীরা সব গাড়িতেই তল্লাশি চালাচ্ছিলেন।
কিন্তু, চায়ের বস্তা সরাতেই অন্য রকম বস্তা, সঙ্গে ঝাঁঝালো গন্ধ। সেই বস্তা খুলতেই বেরিয়ে যা বেরিয়ে এল, তা গাঁজা। পুলিশের দাবি, তার খোঁজেই ছিল তারা। তাদের কাছে পাকা খবর ছিল যে ওই রাস্তা দিয়েই পাচার হচ্ছে গাঁজা। গাঁজার পরিমাণ দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় তাদের। বাজেয়াপ্ত হওয়া গাঁজার পরিমাণ চার কুইন্টালেরও বেশি। গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। এই গাঁজা যাচ্ছিল পড়শি নদিয়ায়। ধৃতরা সেই জেলারই। মঙ্গলবার বহরমপুর শহরের ঘটনা। পুলিশ জানায়, ধৃতরা হল গাড়ির চালক ভক্তিভূষণ বিশ্বাস এবং গাড়ির মালিক আহমেদ শেখ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি ম্যাটাডর। এ দিন সুতিরই অজগরপাড়া মোড় থেকে একটি ৪০৭ গাড়ি আটক করে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই গাড়ি থেকেও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হল আসামের কোকড়াঝড়ের অর্জুন সুত্রধর এবং কালাম আলি। বহরমপুর ও সুতি থেকে ধৃত চার জনকে বুধবার বহরমপুরের বিশেষ আদালত তোলা হয়। কিন্তু কোনও আইনজীবীই তাদের হয়ে সওয়াল করতে রাজি হননি। বিচারক তাদের এক দিন জেল হাজতে পাঠিয়ে লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি থেকে আইনজীবী দেওয়ার নির্দেশ দেন।
মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “আমরা কিছু দিন ধরেই খবর পাচ্ছিলাম, জেলার উপর দিয়ে গাঁজা পাচার হচ্ছে। সে জন্য আমরা নজরদারি চালাচ্ছিলাম।’’ পুলিশ সুপারের দাবি, উদ্ধার হওয়া গাঁজার আনুমানিক দাম প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। দুটি ক্ষেত্রেই আসাম থেকে গাঁজা আসছিল। সেখান থেকে কোচবিহারের নিশিগঞ্জে প্রথমে এই গাঁজা আসে। পরে সেখান থেকে ছোট গাড়ি করে চা-এর আড়ালে বস্তায় করে গাঁজা পাচার করা হচ্ছিল। সুতি থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া গাঁজা কলকাতায় যাচ্ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, বহরমপুর থেকে যে বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার হয়েছে, তা যাচ্ছিল নদিয়ার করিমপুরে। মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম-সহ উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলি থেকে গাঁজা উত্তরবঙ্গ হয়ে মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে নদিয়া-সহ নানা জেলায় পাচার হচ্ছে। জেলা পুলিশের দেওয়া একটি হিসেব অনুযায়ী জানুয়ারি মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৪৪৭৩ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৬২ জনকে।