প্রতীকী ছবি।
আমপানের ক্ষতিপূরণে দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য জুড়ে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ উঠেছিল, শাসক দলের নেতা-কর্মী বা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে ঝড়ে বাড়িঘরের ক্ষতি না-হওয়া সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে অনেককে ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।
সমালোচনা ও বিতর্ক তীব্র হওয়ায় অনেকেই সেই টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বছর শেষ হতে চললেও দেখা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখনও টাকা ফেরত দেননি। বরং টাকা নিয়ে চুপচাপ বসে রয়েছেন। প্রশাসনের তরফেও তাঁদের থেকে টাকা ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই। এ বার তা নিয়েই আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি। নাকাশিপাড়ায় এ ব্যাপারে তারা অভিযোগ দায়ের করেছে।
করোনার আবহের মধ্যেই গত মে মাসের ২০ তারিখ রাজ্যের উপর দিয়ে আমপান ঝড় বয়ে যায়। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। সরকারের তরফ থেকে ঘরহারাদের জন্য ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা হয়। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় এমন অনেকের নাম ঢুকে যায় যাদের বাড়ি একেবারে ঠিক রয়েছে। অথচ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই তালিকার বাইরে থেকে যান।
নাকাশিপাড়া ব্লকে বিজেপির তরফ থেকে লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই ব্লকে এখনও ৬৪ জন প্রতিশ্রুতি দিয়েও আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেননি। এঁরা কেউ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য নন, কারণ তাঁদের কোনও ক্ষতি ঝড়ে হয়নি।
নাকাশিপাড়ার বিজেপি নেতা দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এর পিছনে নাকাশিপাড়ার পঞ্চায়েত সমিতির হাত রয়েছে। এত জনের কাছ থেকে টাকা ফেরত নিতে না-পারাটা ব্লক প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা। শাসক দলের রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি করটা ছড়িয়েছে, এটা তার প্রমাণ।’’
ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন এমন ১২৮ জনের তালিকা তৈরি হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৬৪ জন টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি ৬৪ জন দেননি। নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, "যাঁরা টাকা ফেরত দেননি তাঁদের ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যে 'ফ্রিজ' করা হয়েছে। তাঁদের ডেকে দ্রুত টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে এবং বিষয়টি জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে জানানো হয়েছে। তারা যা বলবে সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আর নাকাশিপাড়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ব্রজেশ্বর রায় বলেন, ‘‘কেউ মুখে মুখে দোষ দিয়ে অভিযোগ জানালে তো হয় না। কাগজ সবকিছু বলবে। নাকাশিপাড়ায় ১৫টি পঞ্চায়েত আছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিজেপি-পরিচলিত। সেখানকার অনেকেই তো এই ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত না-দেওয়া লোকেদের দলে আছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে বিজেপি-প্রধানেরাই সই করেছিলেন। সেই দায় বিজেপিও এড়িয়ে যেতে পারে না।’’