ছেলে এখনও হাসপাতালে। বাড়িতে অবিরল ফোনও পাচ্ছেন— বেসি বাড়াবাড়ি করবেন না! তবু মচকাচ্ছেন না ফটিকবাবু।
ফটিক বিশ্বাস, সাদা পোশাকের পুলিশকে চিনতে না পেরে মোটরবাইকের কাগজপত্র দেখাতে রাজি না হওয়ায় থানায় তুলে নিয়ে বেধড়র মারধর করা হয়েছিল তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছেলে উত্তমকে।
তবে, পুলিশি চাপের কাছে অনড় ফটিক বলছেন, ‘শেষ দেখে’ ছাড়বেন তিনি।
শুনিবার দুপুরে রানাঘাট মহকুমার হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে বলছেন, “এলাকার পরিচিত অনেকেই বলছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা খুব কঠিন কাজ। তাদের পরামর্শ, কেসটা তুলে নেওয়াই ভাল হবে। তবে,আমি কোনও কথা শুনব না। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’’ প্রয়োজনে মানবাধিকার কমিশনে যাওয়ার কথাও বেবে রেখেছেন তিনি।
গত বুধবার রাতে ধানতলা থানায় উত্তম বিশ্বাস নামে কল্যাণী একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রকে মারধর করা হয়। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা, মোবাইল, হাত ঘড়ি এমনকী সোনার আংটিও ছিনিয়ে নেয় পুলিশ।
তবে, এ দিন ওই ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া। তিনি বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষী প্রমানিত নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত, ওই থানার এএসআই দেবাশিস ঘোষকে ডেকে কথা বলেছেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষ। তবে, পুলিশ মহলেই প্রশ্ন উঠেছে, এত কাণ্ডের পরেও ওই পুলিশ কর্মীকে ‘ক্লোজ’ করা হল না কেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিদেনপক্ষে ওই পুলিশকর্মীকে ছুটিতে পাঠানো উচিৎ ছিল।’’
ওই ঘটনার পরে, রানাঘাট মহকুমার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে উত্তমকে। সকাল থেকে হাসপাতালে ভিড় করেছেন পাড়া প্রতিবেশির সঙ্গে তাঁর কলেজের বন্ধুবা্ন্ধবেরাও।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে উত্তম বলেন, “মাথার যন্ত্রনা একটু কমেছে। তবে সারা শরীরে তীব্র ব্যাথা। চোখেও বেশ কষ্ট হচ্ছে।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, উত্তমের এক্স-রে করানো হয়েছে। হাড় ভাঙেনি। তবে চোঠ রয়েছে সারা শরীরে।