পুলিশের তোলাবাজির নালিশ

লরির নীচে যুবক, চাকা উঠল হাতে

পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠছে বুঝে কৃষ্ণনগর থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। লরিটি আটক করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ০৮:১০
Share:

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে জখম কুতুবুদ্দিন। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

লরির ধাক্কায় এক জনের আহত হওয়া নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল কালীগঞ্জে।

Advertisement

পুলিশ গাড়ি আটকে তোলাবাজি করায় বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে অভিযোগ তুলে কালীগঞ্জের ভাগাচাঁদপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। মাস কয়েক আগেই কালীগঞ্জের দেবগ্রামের কাছে গুরুতর আহত হয়েছিলেন এক মোটরবাইক আরোহী। সে বারও একই অভিয়োগ উঠেছিল।

পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠছে বুঝে কৃষ্ণনগর থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। লরিটি আটক করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় পুলিশ প্রায়ই রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে টাকা আদায় করে। আগের বারও পুলিশের বিরুদ্ধে নাকাবন্দি করে তল্লাশির নামে গাড়ি দাঁড় করিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল। মোটর বাইক আরোহী জখম হওয়ার পরে রাস্তা আবরোধ থেকে শুরু করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অনেক কষ্টে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছিল পুলিশকে। এ বারও কার্যত তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। ভাগাচাঁদপুর এলাকার লোকজনের অভিযোগ, এই এলাকায় প্রায় দিনই গাড়ি থামিয়ে টাকা তুলতে দেখা যায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের। সোমবার সকাল থেকে তারা একই ভাবে টাকা তুলছিল। সেই সময়েই পালাতে গিয়ে লরিটি দুর্ঘটনা ঘটায়। গুরুতর জখম হন নাকাশিপাড়ার ধুবি গ্রামের বাসিন্দা কুতুবুদ্দিন আনসারি।

Advertisement

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে ট্রলিতে শুয়ে কুতুবুদ্দিন বলেন, “আমি মোটর বাইক চালিয়ে বাড়ি থেকে দেবগ্রামে যাচ্ছিলাম। ভাগাচাঁদপুরের কাছে ব্রিজের আগে দেখি পুলিশ গাড়ি দাঁড় করিয়ে টাকা তুলছে। সেই সময়ে বহরমপুর থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে একটা লরি আসছিল। পুলিশ হাত দেখিয়ে লরিটাকে দাঁড়াতে বলে।’’

কুতুবুদ্দিনের কথা অনুযায়ী, লরিটা গতি কমিয়ে দিলে এক পুলিশকর্মী পিছন দিক থেকে ছুটে চালকের কাছে পৌঁছতে চান। তিনি উল্টো দিক দিয়ে আসছিলেন। মরিয়া পুলিশকর্মীর ধাক্কায় তিনি মোটরবাইক থেকে পড়েন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার হাতের উপর উঠে যায় লরির চাকা।” তাকে কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার একই ঘটনার পুরাবৃত্তি হওয়ার সত্ত্বেও টনক নড়ছে না জেলার পুলিশ কর্তাদের। তার ফলেই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। এক শ্রেণির অসাধু পুলিশ কর্মীকেই এর দায় নিতে হবে বলে তাঁদের দাবি। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া অবশ্য বলেন, “ঠিক কী ঘটেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি)-কে তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ওঁর কাছ থেকে রিপোর্ট পেলেই পদক্ষেপ করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement